পাঁচ লেখককে সংবর্ধনা
‘গ্রন্থাগার আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৩, ০৭:০০ পিএম
গ্রন্থাগার আমাদের ইতিহাস, গ্রন্থাগার আমাদের সভ্যতা, গ্রন্থাগার আমাদেরকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।
সোমবার বেরাইদ গণপাঠাগার আয়োজিত ‘সাহিত্যালোচনা ও গুণী লেখক সংবর্ধনা ২০২৩’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন একথা বলেছেন।
বাংলাদেশ গ্রন্থসুহৃদ সমিতির সহযোগিতায় ঢাকা উত্তর সিটির ৪২ নং ওয়ার্ডে বেরাইদ গণপাঠাগার কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গণপাঠাগার সভাপতি এমদাদ হোসেন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একেএম রহমতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর আইয়ুব আনসার মিন্টু, পৃষ্ঠপোষক গণপাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ এবং সমন্বয়ক এমদাদুল হক।
অনুষ্ঠানে পাঁচ গুণী লেখককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তারা হলেন লেখক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, কবি ও সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, কথা সাহিত্যিক আয়েশা সিদ্দিকা শেলী, ভ্রমণ লেখক ইমদাদ হক ও কথাসাহিত্যিক সাজেদুল ইসলাম। সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। অনুষ্ঠানে ‘চাই জোরালো গ্রন্থাগার আন্দোলন’ শীর্ষক কীনোট পেপার পাঠ করেন এমদাদ হোসেন ভূঁইয়া।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন তার তিনটি গ্রন্থ ‘অদম্য বাংলাদেশ’, ‘অদৃশ্য প্রযুক্তি’ ও ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’ রচনার পটভূমির বর্ণনা দেন। এরপর গ্রন্থাগার প্রসঙ্গে বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা, তার কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সোনার মানুষ চাই। সোনার মানুষ, স্মার্ট নাগরিক গড়তে হলে বইপড়া চাই। আর বই পড়তে হলে গ্রন্থাগারে যেতে হবে, জ্ঞানচর্চা করতে হবে। বই আত্মার বন্ধন। বেরাইদ গণপাঠাগার শুধু এই অঞ্চল নয়, একদিন আমাদের দেশকে উজ্জল করবে, আলোকিত করবে। সবাই মিলে গ্রন্থাগার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। প্রযুক্তি যতোই নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসুক, বইয়ের বিকল্প নেই।
কথাসাহিত্যিক আয়েশা সিদ্দিকা শেলীর তার লেখা উপন্যাস, ‘হঠাৎ একদিন’ কিভাবে লিখতে উদ্বুদ্ধ হলেন, তা ব্যাখ্যা করেন। গ্রন্থগার প্রসঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হিমালয়ের শিখরে যেমন অনেকগুলো বরফের স্রোতধারা বয়ে যায়, তেমনি গ্রন্থাগারেও অনেক হৃদয়ের স্রোতধারা বয়ে যায়। এক জীবনে সব বই পড়ে শেষ করা যাবে না। তারপরও গ্রন্থাগারে আসুন, বই পড়ুন, তবুও হাসুন। বই পড়লে চিত্ত প্রসারিত হয়, আয়ু বাড়ে। কাগজের বইয়ের পাতা উলটালে যে মমত্ববোধ তৈরি হয়, তার তুলনা হয় না। আমি নিজে নারী। তাই সব সময় নারীদের নিয়ে ভাবি। পুরুষরচিত সাহিত্যে নারীচরিত্র সবসময় সাইডলাইনে থাকে। তাই আমি এই উপন্যাসের মাধ্যমে নারীদেরকে উৎসাহিত, অনুপ্রাণিত ও মহিমান্বিত করার চেষ্টা করেছি চেয়েছি।
ভ্রমণ লেখক ইমদাদ হকের সাড়াজাগানো বই অমর একুশে বইমেলা ২০২২-এ অন্যতম বেস্ট সেলার ‘সার্বিয়া : শুভ্র শহরের দেশে’। এ বইয়ে উঠে এসেছে লেখকের সার্বিয়া ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। বইটি ভ্রমণ পিপাসুদের মনের খোরাক যোগাবে। তিনি বলেন, চারদশক আলো ছড়াচ্ছে বেরাইদ গণপাঠাগার। এলাকাবাসী এই গ্রন্থাগার যুগ যুগ লালন করবে, এটাই প্রত্যাশা।
কথা সাহিত্যিক সাজেদুল ইসলাম সুনাম কুড়িয়েছেন জেমকন তরুণ কথা সাহিত্য পুরস্কারের মাধ্যমে। তার উপন্যাসের নাম ‘সোনার নাও পবনের বৈঠা’। তিনি বেরাইদ গণপাঠাগারের সাফল্য কামনা করেন।
বলেন, প্রত্যেকের কাজ হল পাঠাগারে আসা, বই পড়া, নিজেকে সমৃদ্ধ করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা। সভাপতির বক্তৃতায় অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘আলো ছড়ায় গ্রন্থাগার’ কথাটি বেরাইদ গণপাঠারের জন্য শতভাগ প্রযোজ্য। জ্ঞানভিত্তিক, যুক্তিনির্ভর, আলোকিত ও বিজ্ঞানমনস্ক জাতিগঠনে এর সাফল্য কামনা করি।