লবণ, রঙ আর রাসায়নিকে তৈরি হচ্ছে নামিদামি ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
ফখরুল ইসলাম
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২:১৩ পিএম
![লবণ, রঙ আর রাসায়নিকে তৈরি হচ্ছে নামিদামি ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/04/07/image-663100-1680847986.jpg)
পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকার তিনতলার এক চিলেকোঠা। বাহির থেকে দেখতে আবাসিক কক্ষ মনে হলেও ভেতরে চলছে এলাহীকাণ্ড।
বিশ্বমানের ব্র্যান্ডের মোড়ক দিয়েই বাজারে বিক্রি হচ্ছে নকল শ্যাম্পু। লবণ, রঙ আর রাসায়নিকে তৈরি হচ্ছে নামিদামি ব্র্যান্ডের এসব শ্যাম্পু।
রাজধানীর পুরান ঢাকায় অসাধুচক্র গোপনে নামী ব্র্যান্ডের আসল মোড়ক ব্যবহার করেই বানাচ্ছে চকচকে নকল শ্যাম্পু। যা দেখে চেনা একবারেই দায়।
প্যানটিন, সানসিল্ক, ডাবসহ আন্তর্জাতিক সব ব্র্যান্ডের শত শত খালি বোতল ড্রামে ধুয়ে চকচকে করে নেন কর্মচারীরা। একপাশে রয়েছে লবণ, অন্য পাশে পানি। সঙ্গে রঙ আর রাসায়নিকের ব্যবহার। এভাবেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের শ্যাম্পু। তবে আসল নয়। পুরোটাই নকল।
এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত সিয়াম নামে এক কারিগর যুগান্তরকে জানান, তিনি মূলত পুরাতন মোড়কগুলো পানিতে পরিষ্কার করেন। এর পর এগুলোতে কেমিক্যাল ভরেন। পরে মুখ ঠিক করে লাগিয়ে প্যাকেটিং করে বাজারজাত করেন বলে জানান তিনি।
অবশ্য নকল পণ্য তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকায় তাকে আটক করেছে বিএসটিআই। পাশাপাশি ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন বিএসটিআইয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ওই কারখানার মালিক বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এ ছাড়া কারখানাটিতে কোনো বিশেষজ্ঞ ছিল না। ম্যানেজারের মাধ্যমেই পরিচালিত হতো সব কিছু।
ভেজাল শ্যাম্পু রোধে অরিজিনাল ব্র্যান্ডের মোড়কগুলো ব্যবহারের পর এগুলো ধ্বংস করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিএসটিআই।
সংস্থাটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসিব সরকার যুগান্তরকে বলেন, জনসাধারণ মোড়কগুলো ব্যবহারের পর যদি ছিদ্র বা অন্য কোনো উপায়ে পুনরায় ব্যবহার অযোগ্য করে দেন তা হলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এ ধরনের প্রতারণা করার সুযোগ পাবে না। কারণ তাদের ব্যবহৃত মোড়কটি দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই এটি নকল নাকি অরজিনাল। একই সঙ্গে যারা বিক্রেতা রয়েছেন, তারা যেন কোনোভাবেই স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি ব্যতীত অন্য কারও থেকে পণ্য না কেনেন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এসব ভেজাল শ্যাম্পু ব্যবহারে হতে পারে ক্যানসারসহ চুল পড়ার মতো জটিল রোগ। তাই প্রসাধনী ব্যবহারে ভোক্তাদের আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান তাদের।