রাজধানীর পল্লবীর শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আঁখি আক্তারকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় তার মামাতো ভাই তরিকুল ইসলাম রায়হানের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহার এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার আগে রায়হানকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আঁখির মা ও বাবা মরিসাসে থাকতেন। এজন্য তিনি তার মামা রোকন খানের বাসায় থেকে পল্লবীর শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করতেন। ভিকটিমের বড় মামা নুরুল ইসলামের ছেলে রায়হান স্ত্রী ও বাচ্চাসহ একটি রুমে থাকতেন।

২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে আঁখি কলেজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আর ফেরেননি। বিভিন্ন স্থানে খোজাখুঁজির পর ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের পাশ থেকে কালো রঙের ব্যাগের ভেতর থেকে আঁখির লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় রায়হানের বাবা নুরুল ইসলাম ঢাকা রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকালে ২০১৮ সালের ২ মার্চ রায়হানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান। 

মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৩৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি স্ত্রীকে নিয়ে বাবার বাড়ি ভাষানটেক বেড়াতে যান রোকন খান। স্ত্রী রাগারাগি করে নুরুল ইসলামের বাড়িতে যান। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা পর্যন্ত কোনো মহিলা রোকন খানের বাসায় ছিল না। 

২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে আঁখি রায়হানের রুমে যায়। এ সময় রায়হান আঁখিকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিলে তিনি তা নাকচ করেন এবং সবাইকে বলে দেওয়ার হুমকি দেন। 

রায়হান জোর করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। আঁখি এ ঘটনা সবাইকে বলে দেবে বলে বারবার বলতে থাকেন। পরে রায়হান গলা টিপে আঁখিকে হত্যা করেন।