যেভাবে পরীমনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে ডিবি কর্মকর্তা সাকলায়েনের (ভিডিও)
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২১, ০১:৩৩ এএম
বহুল আলোচিত বোট ক্লাব মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে পরিচয় ডিবি কর্মকর্তা সাকলায়েনের। সেই সূত্র ধরে গড়ে উঠেছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এরপর পরীমনির বাসায় যাতায়াত শুরু করেন তিনি। মাঝে মাঝে গাড়ি নিয়ে বের হতেন দুজনে। সর্বশেষ নায়িকা সাকলায়েনের বাসায় গিয়ে প্রায় ১৮ ঘণ্টা সময় কাটান।
র্যাবের হাতে পরীমনি গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। তাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। পরীমনি গ্রেফতারের পর সবকিছু অকপটে স্বীকার করেছেন বলেও জানা গেছে।
গত ১৩ জুন ঢাকা বোট ক্লাবে গিয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেন চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমণি। এরপর ওই ঘটনায় সাভার থানায় মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গুলশান বিভাগের এডিসি গোলাম সাকলায়েন। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত চলার সময় নায়িকা পরীমনির সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ।
জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি জানিয়েছেন, নিয়মিত কথা বলতে বলতে গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তার। এরপর তারা নিয়মিত গাড়ি নিয়ে ঘুরতে যেতেন। এমনকি সাকলায়েন তার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সর্বশেষ গত ১ আগস্ট তার সরকারি বাসভবন রাজারবাগের মধুমতির ফ্ল্যাটে যান পরীমনি। সেখানে প্রায় ১৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন।
পরীমনির গাড়ি চালক নাজির হোসেন ১ আগস্টের ঘটনা যমুনা টেলিভিশনের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
এরই মধ্যে পরীমনি-সাকলায়েনকে নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, রাজাবাগ পুলিশ অফিসার্স কলোনির মধুমতি ভবনের গেটের সামনে ১ আগস্ট সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে একটি সাদা গাড়ি এসে থামে। লাল রংয়ের টি-শার্ট পরিহিত একজন প্রথমে নামেন। এরপর কোলে একটি কুকুরসহ সাদা রংয়ের জামা পরে নামেন নায়িকা পরীমণি।
রিসিপশনে থাকা সদস্যদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে দুজন লিফটে প্রবেশ করেন। পরে গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি ট্রলি ব্যাগ। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর রাত দেড়টার দিকে ওই ভবনের সামনে আবার আসে পরীমনির গাড়ি। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় পরীমনির পরনে ছিল কালো রংয়ের পোশাক।
পরীমনির গাড়িচালক নাজির জানান, সকালে গিয়ে আমি চলে আসছিলাম, আবার রাতে গিয়ে নিয়ে আসছি।
বনানীর বাসা থেকে যখন সাকলায়েন গেলেন তখন তিনি কী পরা ছিলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাকলায়েন সাহেব সিভিল ড্রেস (প্যান্ট-শার্ট) পরা ছিলেন।
এর আগেও হাতিরঝিল এলাকায় একই গাড়িতে তারা দুজন সময় কাটিয়েছেন, ঘোরাঘুরি ও মদপান করেছেন বলে জানান নাজির।
ঘটনা জানাজানির পর প্রাথমিক তদন্তে সাকলায়েনের সঙ্গে পরীমনির সরকারি ফ্ল্যাটে প্রবেশ এবং দীর্ঘ সময় অবস্থানের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ । তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি গোয়েন্দা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শুক্রবার রাত ১১ টায় এডিসি গোলাম সাকলায়েন সরাসরি পরীমনির সঙ্গে পরিচয় বা সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেননি।
তিনি বলেন, পরীমনির দায়েকৃত মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। এখন এ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত নন।
ফলে পরী কেন- অন্য যে কারও সঙ্গে চলাফেরার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা নেই। এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে কেউ অপপ্রচারে লিপ্ত হলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবেন।
আরেকটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, পরীমনির সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। তবে তা প্রেমের সম্পর্ক নয়। তবে পরীমনি তার বাসায় যাওয়ার কথাও তিনি অস্বীকার করেন। পরে তার বাসায় যাওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে জানালে এ বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি।