আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের ‘অন্যতম হোতা’ গ্রেফতার

যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২০, ০৯:১৬ পিএম

কুয়েতে ৯০০ বাংলাদেশি পাচারের পর আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা আমির হোসেন ওরফে সিরাজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
১৭ আগস্ট নরসিংদীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়ে। সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিরাজ উদ্দিনের কাছ থেকে মানব পাচারের বিষয়ে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।
বিদেশী গোয়েন্দা রিপোর্টের বরাত দিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা জিসানুল হক জানান, চারজন কুখ্যাত মানব পাচারকারী দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার করে আসছিল। এ চক্রের সদস্যদের হাতে ৯ শতাধিক ভিকটিম কুয়েতে পাচারের শিকার হয়। জন প্রতি ৬ লাখ বা এর চেয়ে বেশি টাকার বিনিময়ে তারা ভিকটিমদের কুয়েতে পাচার করে। উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে কুয়েতে পাচারের পর ভিকটিমদের উপর নেমে আসে দুর্বিষহ জীবন। প্রতারিত বাংলাদেশি নাগরিকরা কুয়েতে কোন কাজের সন্ধান পায়নি, বরং সেখানে খাদ্য ও বাসস্থান সংকটের ফলে উদ্ভাস্তু অবস্থায় কুয়েতের রাস্তায়- রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হয়। চক্রটি কুয়েতে ভিকটিমদের বন্দী করে তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ গ্রহন করে। তাছাড়া জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে উল্লেখিত ভিসাগুলো নেয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে কয়েকজন ভিকটিম কুয়েতের সরকারী এজেন্সি ও জনশক্তি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলে তারা বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। কুয়েত এজেন্সি তদন্তে চক্রটির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়। পরে চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে কুয়েতের আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়। এ চক্রের চার সদস্যের (একজন কুয়েতি ও ৩ জন বাংলাদেশি) বিরুদ্ধে কুয়েতের আদালত অভিযোগ আমলে নেয়।
ইতিমধ্যে কুয়েতের আদালত ৩ তিন বাংলাদেশীর ৩ বছর কারাদন্ড ও অর্থদন্ড সহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। এ চক্রের অন্যতম সদস্য কুয়েতি নাগরিক ৬ বছরের সাজা প্রাপ্ত হয়ে কুয়েতে কারা ভোগ করলেও সম্পৃক্ত ৩ বাংলাদেশী মানব পাচারকারী দেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সিআইডির অর্গানাইজ্ড ক্রাইম তদন্ত শুরু করে। পরে ১৭ আগস্ট একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নরসিংদীর মাধবদী থেকে পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা আমীর হোসেন ওরফে সিরাজউদ্দিনকে গ্রেফতার করে।
সিআইডি জানায়, মানব পাচারের বিষয়ে আরও তথ্য উদঘাটনে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য সিআইডির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।