ফার্মগেটে ২ লাশ উদ্ধার
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে উঠেছিলেন তরুণ-তরুণী

যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৫৮ এএম

তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেটের সম্রাট হোটেল। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেটের সম্রাট হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তরুণ-তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই হোটেলে উঠেছিলেন তারা বলে জানায় পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে মরদেহে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পায়নি পুলিশ।
নিহতরা হলেন- তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম সজল ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার জেরিন।
তেজগাঁও থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে খবর পেয়ে ওই হোটেল কক্ষের দরজা ভেঙে দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়। তারা সোমবার বিকালে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে এ হোটেলে উঠেছিলেন।
এদিকে সম্রাট হোটেলের কর্মচারী রোস্তম আলী যুগান্তরকে বলেন, সোমবার বিকালে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেল কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন ওই তরুণ-তরুণী।
মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তাদের রুমের দরজা বন্ধ ছিল। অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ গিয়ে হোটেলের ৮ম তলার ৮০৮ নম্বর কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে।
তেজগাঁও থানার এসআই শরিফুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, হোটেল কক্ষের খাটের ওপরে ছিল আমিনুল ইসলাম সজলের লাশ। আর ফ্লোরে পড়েছিল মরিয়ম আক্তার জেরিনের বিবস্ত্র মৃতদেহ। তাদের ব্যাগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। আমিনুল ইসলাম সজল তেজগাঁও সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও মরিয়ম আক্তার জেরিন বেসরকারি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।
তিনি জানান, ওই হোটেল কক্ষ থেকে উত্তেজক ওষুধের খোসাও উদ্ধার করা হয়েছে। উত্তেজক ওষুধ সেবনে তাদের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ ছাড়া প্রাথমিক তদন্তে তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
আমিনুল ইসলাম সজল কুমিল্লার লাঙ্গলকোট উপজেলার হরিপুর গ্রামের মারুফ হোসাইনের ছেলে।
চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তার খালাতো ভাই নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, ধানমণ্ডির একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করতেন সজল।
এদিকে মরিয়ম আক্তার জেরিনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে। তিনিও ধানমণ্ডির একটি হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতেন। তার বাবা মুসতাক আহমেদ চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী।
তিনি মঙ্গলবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, আমি আমার মেয়েকে চিনি। আমার মেয়ে কোনো অনৈতিক কাজ করতে পারে না। আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাইতে আদালতে যাব। তিনি বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আমি মামলায় যাব।