উত্তর সিটি উপনির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:০১ এএম
চলছে ভোট গণনা। ছবি-সংগৃহীত
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং দুই সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ।
এদিকে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কেন্দ্রে আসেন ভোটাররা। তবে প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি ছিল কম।
নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকার দুই সিটি ও নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে ঢাকার দুই সিটির প্রধান সড়কে যান চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ ও আগের সিটি কর্পোরেশনগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হলেও এ নির্বাচনে তা ব্যবহার করেনি ইসি।
এদিকে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার না আসার দায় নির্বাচন কমিশনের নয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার আনার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর এবং প্রার্থীদের।
এছাড়া ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেন, প্রধান বিরোধীদলগুলো অংশ না নেয়ায় এটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নয়। ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম।
ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শাফিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ঘুরছি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরেও ভোটারদের দেখা পাইনি।
রাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সুন্দরভাবে ভোট হচ্ছে। সব জায়গাতেই ভোটারদের প্রচণ্ড ভিড়। আশা করি ভোটাররা নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে ভোট দিয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করবেন।
ভোটারদের নিরাপত্তায় বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের টিম টহলে আছে। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পদে আওয়ামী লীগসহ চারটি রাজনৈতিক দলের চারজন ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির সঙ্গে ১৮টি করে নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় সেগুলোতেও ভোটগ্রহণ হচ্ছে। নবনির্বাচিতদের মেয়াদ হবে এক বছরের কিছু বেশি সময়। সব দল অংশগ্রহণ না করা এবং মেয়াদ কম থাকায় এ নির্বাচনের প্রচার ছিল অনেকটাই নিরুত্তাপ।
তবে শেষ মুহূর্তে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার ছিল চোখের পড়ার মতো। ঢাকা উত্তর সিটিতে যুক্ত হওয়া ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১১৬ জন এবং সংরক্ষিত ছয়টি ওয়ার্ডে ৪৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া এ সিটির ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের উপনির্বাচনে সাত প্রার্থী রয়েছেন। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১২৫ জন ও সংরক্ষিত ছয়টি ওয়ার্ডে ২৪ প্রার্থী রয়েছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি। এ সিটিতে ভোটকেন্দ্র এক হাজার ২৯৫টি ও ভোটকক্ষ ছয় হাজার ৪৮২টি। ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন।
এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩০ জন ও নারী ১৪ লাখ ৭২ হাজার ৯১ জন। উত্তরে নতুন করে যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডে ভোটার ৫ লাখ ৯০ হাজার ৭০৫ জন।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড ছয়টি। এসব ওয়ার্ডে ভোটার চার লাখ ৯৬ হাজার ৭৩৫ জন; পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৯৭ জন ও নারী দুই লাখ ৪২ হাজার ২৩৮ জন। ভোট কেন্দ্র ২৩৫টি ও ভোটকক্ষ এক হাজার ২৫২।