ইবিতে র্যাগিংয়ের ঘটনায় ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা, জেলহাজতে ৫
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী। মামলার পর ৫ শিক্ষার্থীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শেহান শরীফ শেখ, শরিফুল ইসলাম লিমন, কান্ত বড়ুয়া, জিহাদ, শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল ও ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের সঞ্চয় বড়ুয়া। এরমধ্যে সাব্বির, শেহান শরীফ, শরিফুল, কান্ত বড়ুয়া ও সঞ্চয় বড়ুয়াকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে, সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় লালন শাহ হলের গণরুমে ভুক্তভোগীদের র্যাগিং শুরু করে। পরবর্তীতে রাত ১২টার দিকে হলের অন্য সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাদের হাতেনাতে ধরে রাতেই ইবি থানার পুলিশ হেফাজতে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীদের একজন মামলা করলে পুলিশ ৫ জনকে কুষ্টিয়া আদালতে প্রেরণ করেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে ভুক্তভোগীদের র্যাগিং করে আসছিল। তারা ভুক্তভোগীদেরকে নীল সিনেমার তারকা সাজিয়ে অভিনয় করতে বাধ্য করা, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদানসহ নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে।
ভুক্তভোগী সূত্রে, এর আগে গত ১৬ নভেম্বর রাতেও নবীন ব্যাচের ১২ জন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে ডাকেন অভিযুক্তরা। তাদের রাত আড়াইটা পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পর্নো সিনেমার তারকাদের নাম জিজ্ঞেস করা হয়। কাউকে পর্নো তারকা সেজে অভিনয়ও করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া তিনজনকে দিয়ে অশ্লীল কবিতা পাঠ করানো হয় এবং নানারকম হুমকিও দেয় অভিযুক্তরা। এছাড়াও তারা ভুক্তভোগীদের সিগারেট ও গাঁজা সেবনের অভিনয়, প্যাকের নামতা বলা ও রিলেশনশিপের ওপর এসাইনমেন্ট লিখতে বাধ্য করেন।
এদিকে অভিযোগ তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে লালন শাহ হল প্রশাসন। কমিটিতে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনকে আহবায়ক এবং সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন- সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফখরুল ইসলাম ও হলের আবাসিক শিক্ষক রাসুল করিম। কমিটিকে আগামী রোববারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ও তদন্ত কমিটি আহ্বায়ক ড. আকতার হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ফরিদ উদ্দীন বলেন, মামলার পর পাঁচজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।