উত্তাল চুয়েট, ৭ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে আন্দোলন
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় দ্বিতীয় দিনও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। চুয়েটের প্রধান ফটকের সামনে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দিনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা।
সড়ক অবরোধের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে ঘোষণা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।
শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো- পলাতক চালক ও তার সহযোগীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ব্যবস্থা করা, নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং আহত শিক্ষার্থীর সব চিকিৎসা ব্যয় শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষকে গ্রহণ করতে হবে, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ক্যাম্পাসে আধুনিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স–সুবিধা বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে শাহ আমানত ও এবি ট্র্যাভেলসসহ সব লোকাল বাস চলাচল বন্ধ করা, রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক নির্মাণ করা, প্রতিটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাগজপত্র ও চালকদের লাইসেন্স নিয়মিত যাচাই করা, ছাত্রকল্যাণ পরিষদকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ছাত্র প্রতিনিধি দল গঠন করা। এসব দাবি লিখিতভাবে না মানা পর্যন্ত চুয়েটের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম (ক্লাস-পরীক্ষা) স্থগিত থাকবে বলে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন।
আন্দোলনের পাশাপাশি মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গায়েবানা জানাজা এবং বিকাল ৩টায় শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলন প্রসঙ্গে চুয়েটের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষর্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তারাও বেদনাহত। শিক্ষার্থীরা যেসব দাবিতে আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে চুয়েট প্রশাসনও একমত। তবে সমস্যাগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী। দ্রুতগতির শাহ আমানত পরিবহণের একটি বাস শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেলটি ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তওফিক হোসেন। সহপাঠীদের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর ওই দিন সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চারটি বাস আটক করেন। তিন বাস ভাঙচুর এবং একটিতে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ করেন।