Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

রাবিতে সমন্বয়ক প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তা নিয়োগ: দাবি ৬ ছাত্র সংগঠনের

Icon

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম

রাবিতে সমন্বয়ক প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তা নিয়োগ: দাবি ৬ ছাত্র সংগঠনের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ দপ্তরে অনুসন্ধান কাম-তথ্য কর্মকর্তা পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘পৃষ্ঠপোষক’ রাশেদুল ইসলামকে নিয়োগের পেছনে কয়েকজন সমন্বয়ক প্রভাব খাটিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ নিয়োগ দিয়েছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনগুলোর নেতারা। 

এতে ৬টি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফুয়াদ রাতুল, ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আল শাহরিয়ার শুভ, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সিকদার ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি শামিন ত্রিপুরা। 

লিখিত বক্তব্যে রাকিব হোসেন বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে একত্রিত হয়েছি। রাশেদুল ইসলাম রাবির সমন্বয়কদের ‘পৃষ্ঠপোষক’। তিনি স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক। 

তিনি বলেন, মেহেদী সজীব, ফাহিম রেজাসহ স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের আরও কয়েকজন সদস্য রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক প্যানেলে আছেন। আমাদের ধারণা, অতীতের আওয়ামী লীগের মতো এই সমন্বয়করা নিজেদের প্রভাব খাটিয়েছে এবং এ নিয়োগের পেছনে তারা জড়িত থাকতে পারেন। স্বজনপ্রীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই নিয়োগ সম্পন্ন করেছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নিয়োগসহ একাধিক নিয়োগে সমন্বয়কদের প্রভাব রয়েছে দাবি করে রাকিব হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ জন সমন্বয়কের মধ্যে ১২ জন সম্মত হয়ে উপ-উপাচার্য নিয়োগে কলকাঠি নেড়েছে। আমাদের আশঙ্কা, প্রশাসনকে জিম্মি করে রাশেদুলের নেতৃত্বাধীন সমন্বয়কদের এই অংশটি শুধু নিয়োগ প্রক্রিয়া নয় আরও অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার করছে। এছাড়াও অতীতে জনসংযোগ দপ্তরে নিয়োগ পাওয়া প্রশাসকও সমন্বয়ক মেহেদীর বিভাগের ঘনিষ্ঠ শিক্ষক। তাছাড়া বিভিন্ন হল প্রাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রেও তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। 

রাশেদুল ইসলামের নিয়োগ গণঅভ্যুত্থানের নীতিবিরোধী ও ২ হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানির সামিল বলে মন্তব্য করেন রাকিব হোসেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে যে বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল কিন্তু একটা গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের মালিকানা দাবি করে সমস্ত স্বপ্ন-চেতনাকে নসাৎ করেছিল। তেমনি ৫ আগস্ট বা ৩৬ জুলাইয়ের পরও আমাদের স্বপ্ন ছিল সমতা ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলব; কিন্তু আমাদের স্বপ্নও আজ নসাৎ হয়েছে। 

রাশেদুলের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাশেদুলের একাডেমিক ফলাফল এবং সামগ্রিক বিষয়ে উপাচার্য অবগত নয়। এই নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হওয়ায় তারা নিয়োগ দেওয়ার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংস্কার এবং অনতিবিলম্বে রাশেদুলের নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে রাশেদুল ইসলামকে অ্যাডহক ভিত্তিতে ৬ মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরে অনুসন্ধান কাম তথ্য কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার নিয়োগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম