৭ কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হবে ইউজিসি-কলেজ অধ্যক্ষের নেতৃত্বে

বাসস
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম

ফাইল ছবি
দীর্ঘদিনের উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে সরে এলো সাত কলেজ। রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের সব ধরনের কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সাত কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হবে ইউজিসি-কলেজ অধ্যক্ষের নেতৃত্বে।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ঢাবি উপাচার্য বরাবর পাঠানো হয়েছে। সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার আগ পর্যন্ত এ কাঠামো অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। ইউজিসির প্রস্তাবনা অনুসরণে এ নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রণালয়।
সুপারিশে বলা হয়, নজরদারি সংস্থার মনোনীত সাত কলেজের মধ্য হতে একজন যোগ্য ও প্রশাসনিক কাজে অভিজ্ঞ অধ্যক্ষের নেতৃত্বে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সংশ্লিষ্ট থাকবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধি। দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বিষয় চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির রেজিস্ট্রার দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, অর্থ ও হিসাব সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখার মনোনীত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া সাত কলেজের (ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ) অনলাইন ভর্তি কমিটির মাধ্যমে আবেদন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এসব কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এ কাঠামো বলে জানিয়েছে সরকার। দ্রুত ঢাবির সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি চূড়ান্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির রেজিস্ট্রার দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, অর্থ ও হিসাব সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখার মনোনীত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সাত কলেজের অনলাইন ভর্তি কমিটির মাধ্যমে আবেদন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এসব কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এ কাঠামো বলে জানিয়েছে সরকার।
ইউজিসির সুপারিশমালায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রশাসনিক জটিলতা ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে। সাত কলেজ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অধিভুক্ত সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন হতে নিম্নবর্ণিত সুপারিশ করা হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি সংক্রান্ত দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব বিভাগের প্রতিনিধি সমন্বয়ে সাময়িক একটি সমন্বিত কাঠামো থাকবে যা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ হতে সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর পর্যায়ে যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এতে বলা হয়, একটি সনদপ্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়/ সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজের দায়িত্ব পালন করবে, কাঠামোর কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরের কোনো উপযুক্ত কার্যালয় (যে কলেজ থেকে পরিচালক মনোনীত হবেন) থেকে পরিচালিত হবে, এই কাঠামোর অধীনে সকল হিসাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালিত হবে।’
ইউজিসি সূত্র আরও জানায়, প্রস্তাবিত ব্যবস্থাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ পর্ষদে (একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট) জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদিত হতে হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি সংক্রান্ত দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব বিভাগ প্রস্তাবিত কাঠামোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনায় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সাত কলেজের ভর্তি, পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদানের জন্য স্ব স্ব কলেজের অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণে একটি করে হেল্প ডেস্ক থাকবে। নিয়োগ প্রাপ্তির পরেই প্রস্তাবিত সাময়িক কাঠামোর পরিচালক জনবলের প্রস্তাবসহ কাঠামোর কার্যক্রমের অপারেশন ম্যানুয়েল প্রণয়ন করে সিন্ডিকেটে অনুমোদনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাখিল করবেন। কমিশন সমন্বিত কাঠামোর সার্বিক তত্ত্বাবধানসহ সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে।
উল্লিখিত সুপারিশ অনুমোদনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।