Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মামলায় আসামি ৫শ, তদন্ত কমিটির কাজ শুরু

কুয়েট প্রশাসন ও ছাত্র রাজনীতিকে ‘লাল কার্ড’

আমার কোনো দায় নেই, কেন পদত্যাগ করব-উপাচার্য

Icon

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কুয়েট প্রশাসন ও ছাত্র রাজনীতিকে ‘লাল কার্ড’

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) প্রশাসনসহ সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে কুয়েটের দুর্বার বাংলা চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এই ‘লাল কার্ড’ প্রদর্শন করা হয়। শিক্ষার্থীরা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রমৈত্রী ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ সব ছাত্র সংগঠনকে লাল কার্ড দেখান। পাশাপাশি মঙ্গলবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় কুয়েট প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে বর্জন করে তাদেরও ‘লাল কার্ড’ প্রদর্শন করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

এদিকে মঙ্গলবার কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে। তিনি প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি ঢাকায় যান। অন্যদিকে কুয়েটের অপ্রীতিকর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে চার সদস্যের কমিটি। তবে একাডেমিক ভবনগুলো তালাবদ্ধ থাকায় তদন্তে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় বুধবার রাতে নগরীর খানজাহান আলী থানায় ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছে কুয়েট প্রশাসন। তবে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

দুপুরে দুর্বার বাংলা চত্বরে জড়ো হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় তারা জানান, কুয়েটে কেউ রাজনীতি করতে চাইলে তাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বহিষ্কার করতে হবে। পাশাপাশি একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হলেও তারা কেউ ক্যাম্পাস ছাড়বেন না বলে জানান। তারা দাবি করেন, সংঘর্ষের সময় কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি শিক্ষার্থীরা ছয়টি দাবি জানালেও সেগুলো মানেনি প্রশাসন। খুব দ্রুত কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা একটি স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তাছাড়া এ ঘটনায় এখনো কোনো উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেননি বলে হতাশা প্রকাশ করেন তারা।

তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. এমএমএ হাসেম এক বিফ্রিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা থাকায় কাজে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে। তিনি বলেন, কুয়েট ক্যাম্পাস রাজনীতিমুক্ত থাকুক এটা আমরাও চাই। ইতোমধ্যে বেশকিছু তথ্য-উপাত্ত আমরা সংগ্রহ করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ নিজ বাসভবনে বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, সংঘর্ষের দিন আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলাম এবং প্রশাসনকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে একাধিকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু আমি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমাকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। বুধবার জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের ছয় দাবির মধ্যে ৫টি মেনে নেওয়া হয়েছে।

উপাচার্য বলেন, এই ঘটনায় আমার কোনো দায় নেই। তাহলে আমি কেন পদত্যাগ করব, এটা বুঝতেছি না। সরকার আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে কুয়েট পরিচালনার জন্য। আমরা দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেন, কুয়েট প্রশাসন বুধবার রাতে অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে।

উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করায় নিন্দা ঢাবি সাদা দল ও ছাত্রদলের : ঢাবি প্রতিনিধি জানান, কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক মাছুদকে লাঞ্ছিত করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। বৃহস্পতিবার ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এবং ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম ও অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার আলাদা বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম