যৌথবাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় রাবিতে বিক্ষোভ
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:১৮ এএম
ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলা চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা মিছিলে ‘বিনা বিচারে হত্যা, আর না আর না’, ‘নো মোর মিলিটারি, ব্যারাকে যাও তাড়াতাড়ি’, ‘খুনি বাহিনীর পাহারাদার, বাহ ইউনুস চমৎকার’, ‘যৌথ বাহিনীর গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘মিলিটারি মানুষ মারে, ইউনুস সরকার কী করে’, ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আর না আর না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যদি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়, তাহলে দেশের সংসদ, আইন-আদালত, পুলিশ প্রশাসনের কী দরকার? সারাদেশে ঘটে যাওয়া বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে জড়িতদের তাঁরা বিচার চান। এ ছাড়া অবিলম্বে সেনাবাহিনীর হাত থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রত্যাহার করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান শেষ হওয়ার পর মানুষের মনে যে সাম্য, ন্যায়বিচারের আকাঙ্খা সৃষ্টি হয়েছিল তার বিন্দুমাত্র বাস্তবায়িত হয়নি। তৌহিদুল ইসলামকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তাঁর শরীরে যে নির্মমতার চিহ্ন দেখা গেছে, কোনো পশু, কুকুর-বিড়ালকেও মানুষ এভাবে পেটায় না। এই ঘটনায় শুধুমাত্র প্রত্যাহার কোনো বিচার হতে পারে না। এখানে বিচারের নামে প্রহসন দেখা যাচ্ছে। আমরা ধিক্কার জানিয়ে সেই যৌথ বাহিনীর সদস্যদের বিচার দাবি করছি। যৌথ বাহিনীর নামে ইউনুস সরকার এ ধরনের গোন্ডাতন্ত্র কায়েম করতে চাইলে আমরা তাদেরকে ছাড়ব না। যদি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়, তাহলে দেশের সংসদ, আইন-আদালত, পুলিশ প্রশাসনের কী দরকার?
ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিবুল হাসান বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের আমলে হাজার হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তারপরে একটা রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের মাধ্যমে এই অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তবে এই সরকারের আমলেও আগের মতোই বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই মানুষকে গ্রেফতার করে ব্যারাকে নিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে। অনেকদিন থেকে মব জাস্টিস ও মাজার ভাঙা হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
পাহাড়ে সেনাবাহিনীর শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এবং বিভিন্ন বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীন ত্রিপুরা।
এ ছাড়া সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান।