দেশে অনৈতিকতা রুখতে আইনের শাসন জরুরি: শিশির মনির
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১৭ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আসা সংস্কার প্রস্তাবনা কার্যকরের মাধ্যমে নিউ মডেলের বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়ামের (আইআরডিসি) আয়োজনে ‘নাগরিক দায়িত্ব ও আইনের শাসন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
শিশির মনির বলেন, যেকোনো দেশের জন্য আইনের শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের গণতন্ত্রের গতি বৃদ্ধি পায়। আইনের শাসনে বিশ্বাস করলে রাষ্ট্রে অনৈতিক কর্মকাণ্ড রোধ করা সম্ভব। ‘জনগণের ক্ষমতাই সবচেয়ে বড়’ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ সত্য মেনে নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারকে আইনের শাসনে পরিচালিত করতে হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। জনগণ সচেতন না হলে আবারও অনৈতিক সরকারের অভ্যুত্থান ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, একজন শিক্ষককে যাচাই করবে ছাত্ররা। শিক্ষকদের চ্যালেঞ্জ করার মতো ছাত্র যেখানে থাকবে, সেখানে শিক্ষকরা অধিকতর সচেতন হবেন।
প্যানেল আলোচনায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, নাগরিকের মধ্যে নৈতিকতা না থাকায় আইনের প্রতিফলন সমাজে আসেনি।
তিনি বলেন, আল্লাহ আমাদের সর্বোত্তম জাতি হিসেব তৈরি করেছেন। কিন্তু আমাদের যে দায়িত্ব ‘সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ’ সেটা আমরা করতে পারিনি জন্যই সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ফ্যাসিবাদকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হতো যদি আমরা সঠিকভাবে প্রতিবাদ করতাম। আইনের বাস্তব প্রয়োগ না হওয়ার কারণে আমাদের নাগরিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারিনি।
আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান সাদী বলেন, এত বছর আইন প্রয়োগ করা হলেও মূলত দেশে সঠিক আইন ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করেছে, যা রাষ্ট্রের আইনি কাঠামোকে দুর্বল করেছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেজবাহ উল আজম সওদাগর বলেন, আইনের শাসন না থাকলে ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও অযোগ্যতার ওপর সবকিছু নির্ভর করে। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে, ব্যক্তি ক্ষমতা কমাতে হবে। তাহলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইআরডিসির প্রেসিডেন্ট ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন। সঞ্চালনা করেন আইআরডিসির জেনারেল সেক্রেটারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক। এ সময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেন।