Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি

আজও কর্মবিরতিতে রাবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

Icon

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৫ পিএম

আজও কর্মবিরতিতে রাবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আজও পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা আগামীতে পরীক্ষা, পরিবহণসহ জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। 

কর্মবিরতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রায় সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। শুধু জরুরি পরিষেবা বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, পানি, পরিবহণ ও নিরাপত্তা প্রহরী শাখায় কর্মরতরা দায়িত্ব পালন করছেন। 

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, আবাসিক হল এবং বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ অফিস কক্ষের তালা খোলা হয়নি। কিছু কিছু কক্ষের দরজা খোলা থাকলেও ভেতরে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেখা যায়নি। প্রশাসনের ভবনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সনদ শাখা পুরোপুরি বন্ধ আছে। ফলে জরুরি কাজে মার্কশিট, সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে আসা শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

কর্মসূচিতে প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে বক্তারা বলেন, তারা সব ধরনের অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে তারাও আন্দোলন করেছেন। ভর্তি পরীক্ষায় তাদের সন্তানেরা যে সুবিধা পেতেন, সেটি কোনো কোটা নয়, এটা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। এ দাবিতে তাদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার বহাল আছে। তারাও এই সুবিধা ফেরত চান। তাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হলে আগামীতে পরীক্ষা, পরিবহণসহ জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে অসহযোগ আন্দোলনে যাবেন। 

কর্মসূচিতে রবিউল ইসলাম নামে বিশ্ববিদ্যালয় ছাপাখানার এক কর্মকর্তা বলেন,  ‘গত জুলাই বিপ্লবে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি, সেই স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল সব ধরনের বৈষম্য দূর করা। কিন্তু এই বিপ্লবের পরে হঠাৎ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হয়ে উঠেছে। যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হলো। সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অ-গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে ইস্যু করে আন্দোলন করা হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ৩টি ফুল হয়, তবে একটি প্রশাসন, একটি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আরেকটি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার্থীরা। তাহলে আপনারা কেন আমাদের বুঝলেন না? কেন আলোচনা করলেন না? হঠাৎ করে আমাদের অবরুদ্ধ করে দিলেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সায়েন্স ল্যাবের উপ-রেজিস্ট্রার মো. বখতিয়ার বলেন,  'বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়ে থাকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে একটি পরিবার। আবার আপনারা বলেন পরিবার নিয়ে চলতে চাই। কিন্তু পরিবারের একটা অংশ বন্ধ হয়ে গেলে আপনারা চলতে পারবেন তো? তাই আপনারা আসেন আলোচনা করেন। আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিন। আমরা বার বার বলে আসছি এটা কোনো কোটা নয়, এটা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। যতদিন না আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।'

উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করে শুধু সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবিতে পরদিন (২ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহ–উপাচার্য, প্রক্টর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকসহ দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তারা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ওই রাতেই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল বলে ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব।

এই ঘোষণার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন। তারা  মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও পূর্ণদিবস কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। একই দাবিতে বুধবারও পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম