
প্রিন্ট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
বাকৃবিতে গেস্টরুম করানোয় বহিষ্কার ২৭ শিক্ষার্থী

বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নবীন শিক্ষার্থীদের গেস্টরুম করানোর দায়ে ২৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিনেন্স অনুযায়ী, শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তাদের ১ বছরের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কার ছাত্র মধ্যে ওই হলের লেভেল-১,
সেমিস্টার-২, লেভেল-২, সেমিস্টার-২ এবং মাস্টার্সের একজন শিক্ষার্থী রয়েছেন। ঘটনা জানার
পরেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন রোববার রাতে হলে গিয়ে জড়িতদের চিহ্নিত করা
হয়। পরে সত্যতা জেনে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।
সোমবার সকালে বিষয়টি জানিয়েছেন হোসেন
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান মোল্যা।
জানা যায়, শনিবার রাত ৯টায় হলের রিডিং
রুমে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে ডাকা হয়। সবাইকে মোবাইল ফোন রুমে রেখে আসতে বলা
হয় এবং গেস্টরুমের শুরুতেই কারোর কাছে মোবাইল আছে কি না সেটি তল্লাশি করা হয়। এরপরে
দ্বিতীয় বর্ষের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী হলের কিছু উদ্ভট নিয়ম (সাইকেল চালানো যাবে না,
২য় তলায় যাওয়া যাবে না, বড় ভাইদের সাথে দিনে যতবার দেখা হবে ততবার সালাম, পরিচয় ও হ্যান্ডশেইক
করতে হবে, হলে লুঙ্গি পড়া যাবে না, হলের গ্রন্থাগারে ল্যাপটপ নিয়ে যাওয়া যাবে না, হলের
ক্যান্টিনে যাওয়া যাবে না ইত্যাদি) নবীন শিক্ষার্থীদেরকে জানান। যেগুলো তাদেরকে মানতেই
হবে।
এরপরে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা এসে
নবীনদের কিছু দাবি-দাওয়া জানতে চান। নবীনরা তাদেরকে হলভিত্তিক বিভিন্ন সমস্যার কথা
জানায়। পরে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা চলে গেলে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা নবীনদের
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।
বড় ভাইদের কাছে নবীনরা সমস্যাগুলো বলার
কারণেই তাদের উপর চড়াও হয় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এরপরে ছোটোখাটো ভুল উল্লেখ
করে নবীনদের একজন একজন করে ডেকে ডেকে গালিগালাজ করা হয়। বিভিন্ন উদ্ভট শাস্তি দেওয়া
হয় (১০ রকমের হাসি, ১০ রকমের সালাম, গাছে ঝুলে থাকার অভিনয় করা, নাচ করা ইত্যাদি)।
এমন পরিস্থিতিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে প্রথম বর্ষের একজন মাথা ঘুরে পড়েও যায়। পরে তাকে
হলের মধ্যেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে
নবীনদের গেস্টরুম শেষ হয়।
এ বিষয়ে বাকৃবি সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা
অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, সোহরাওয়ার্দী হলের ঘটনায় ৫২ জনকে শনাক্ত
করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৭ জন সোহরাওয়ার্দী হলের ছাত্র আর বাকিরা অন্য হলের। কিন্তু
তারা সোহরাওয়ার্দী হলে থাকে। সোহরাওয়ার্দী হলের ২৭ জনকে হল থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার
করা হয়েছে। অধিকতর শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে প্রেরণ করা
হবে। যারা এই হলের ছাত্র না কিন্তু অবৈধভাবে থাকে এবং এই ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের খুঁজে
বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।