Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

ছাত্রনেতাদের দাবি

আগে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার, পরে নির্বাচন

Icon

মাহাদী হাসান

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

আগে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার, পরে নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচনের আগে এর গঠনতন্ত্র সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রনেতারা। তারা বলছেন, আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। কেননা ডাকসুর গঠনতন্ত্র শিক্ষার্থীবান্ধব নয়। ফলে এর পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীবান্ধব করা অপরিহার্য। তবে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে নির্বাচন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও লক্ষ করা গেছে। এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, দ্রুত সম্ভব সবাইকে নিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাই।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালের মার্চে। ওই সংসদের মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। এরপর দীর্ঘ ৪ বছর বন্ধ নির্বাচন। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে আবার ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি ওঠে। এরই মধ্যে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারিতে ডাকসু নির্বাচন হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে ছাত্রনেতাদের অধিকাংশই ডাকসুর গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীবান্ধব করার দাবি জানাচ্ছেন।

ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন যুগান্তরকে বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। আমরা শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার পক্ষে। ২০১৯ সালে সর্বশেষ যে ডাকসু হয়, তখন যে গঠনতন্ত্র ছিল, তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করে না। এটি নিয়ে আমাদের সংস্কারের প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেব। আর সেই সংস্কারগুলো সম্পন্ন হওয়ার পর উপযুক্ত সময়ে আমরা ডাকসু নির্বাচন চাই। নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে আমরা এখনো কোনো চিন্তা করিনি। তবে অবশ্যই ডাকসু নির্বাচনের আগে আমরা সংস্কারের সর্বোচ্চ দাবি জানাব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাবি শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্রসমাজের লিগ্যাল প্রতিনিধি হওয়ার জন্য ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজন অবশ্যই আছে। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধ প্রতিনিধি নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করি। আর সেটা অবশ্যই ডাকসুর মধ্য দিয়ে হবে। শুধু ডাকসু নয়, সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু হলে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে।

ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি এসএম ফরহাদ যুগান্তরকে বলেন, খুব দ্রুত ডাকসু নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয় ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনে যে সময় দিয়েছে, সেই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া দরকার। ডাকসুর গঠনতন্ত্রের একটি খসড়া আমরা তৈরি করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে সেটি প্রকাশ করা হবে। গঠনতন্ত্র নিয়ে তিনি বলেন, ডাকসুর গঠনতন্ত্রের আমূল পরিবর্তন করতে হবে, নট নেসেসারি। বেসিক কিছু জায়গায় পরিবর্তন করলেই হবে। আর এক-দুটি মিটিং করেই তা করা সম্ভব। এর জন্য অনেক সময় প্রয়োজন নেই। গঠনতন্ত্রে উপাচার্যকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেটি কমাতে হবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, আমরা চেয়েছিলাম জানুয়ারির শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে যাতে ডাকসু নির্বাচন হয়। তবে এ সময়ে নির্বাচন করার জন্য যে ধরনের কার্যকর পদেক্ষপ দরকার, তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এখনো নিতে দেখিনি। তবে কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গঠনতন্ত্র সংস্কার না করে দ্রুত সময়ে ডাকসু নির্বাচন দেওয়া উচিত হবে না।

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি (একাংশ) রাগিব নায়িম যুগান্তরকে বলেন, আমরা যে ছাত্র আন্দোলন করেছি, সেটাকে সফল করার জন্য অবশ্যই ডাকসু নির্বাচন দিতে হবে। ডাকসু নির্বাচনের আগে প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে হবে। একটু সময় নিয়ে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার করা দরকার বলে আমি মনে করি। এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী। আমরা চাই, সবার মধ্যে নির্বাচন নিয়ে ঐক্য তৈরি হোক। সবার মধ্যে এ ব্যাপারে যেন চুক্তি বা সমঝোতার মতো কিছু হয়। আমরা সবাইকে নিয়েই একটি উৎসবমুখর পরিবেশে এ নির্বাচন আয়োজন করতে চাচ্ছি। দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে নিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাই। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কাম্য।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম