Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও কুবিতে নেই কমনরুম

Icon

সাঈদ হাসান, কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৮ পিএম

প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও কুবিতে নেই কমনরুম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর হলেও কোনো কমনরুম সুবিধা চালু করতে পারেনি প্রশাসন। এতে বাড়ি কিংবা শহর থেকে এসে ক্লাশ করা নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে নানা ধরনের ভোগান্তি। দীর্ঘ ক্লাশ বিরতিতে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন না ব্যক্তিগত সময় কাটানোর সুযোগ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন এবং বিভিন্ন বিভাগগুলোর কোনোটিতেই নেই কমনরুম সুবিধা। নেই নামাজ পড়ার জন্য নির্ধারিত কোনো স্থান বা বেবি ফিডিং কর্নার। ফলে বিবাহিত শিক্ষার্থীরা তাদের বাচ্চাদের স্তন্যপানে সম্মুখীন হচ্ছেন নানা জটিলতার। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের মধ্যে শুধু বিজ্ঞান অনুষদে মেয়েদের জন্য নামাজের জায়গা রয়েছে কিন্তু নেই উপযুক্ত অজু করার ব্যবস্থা। এমনকি প্রশাসনিক ভবনে নামাজ আদায়ের জন্য কোনো স্থান দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ; যার ফলে নানারকম ভোগান্তিতে এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িক সময়ের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মেয়েদের জন্য কমনরুম। তাছাড়া দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য কমনরুমের পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জাহান আল আভী বলেন, মেয়েদের জন্য বিশেষ রুম বা কমন রুম দরকার। প্রায় সময়ই দেখা যায় একটা ক্লাশ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী ক্লাসের জন্য বাহিরে বারান্দায় বা সিঁড়িতে অবস্থান করতে হয়। এটা অনেকটাই যন্ত্রণাদায়ক। আবার কিছু ছাত্রী আছে যাদের ছোট শিশু নিয়ে ক্লাসে আসতে হয়। সেক্ষেত্রে বাহিরে দাঁড়িয়ে অবস্থান করাটা, কিংবা শিশুকে খাবার খাওয়ানোর জন্য হলেও একটা বিশেষ কক্ষ দরকার, যেখানে তারা নিরাপদে সকল কার্যক্রম করতে পারবে, কিছুটা সময় অবস্থান করতে পারবে। যদি শিশুদের জন্য একটি ডে-কেয়ার কক্ষ দেওয়া যায়, তাহলে অনেক মা শিক্ষার্থীই উপকৃত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের নামাজ পড়ার জন্য কোনো জায়গা নেই। আলাদা রুম থাকলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগত না। এ সমস্যার কথা ভিসি স্যারকে জানিয়েছি আমরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র নার্স জেসমিন আক্তার বলেন, অনেক সময় দেখা গেছে কিছু মেয়ে শিক্ষার্থী বাচ্চা নিয়ে আমাদের মেডিকেল সেন্টারে ড্রেসিংরুমে আসে বাচ্চাকে ফিডিং করার জন্য। কিন্তু যখন কোনো ইমার্জেন্সি রোগী চলে আসে, তখন তাকে সেই বেডটা ছেড়ে দিতে হয়।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া আফরিন সানি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ব্রেস্ট কর্নার নেই, এটা থাকা খুবই জরুরি। অনেক শিক্ষকই রয়েছেন, যাদের বাচ্চা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়। এক্ষেত্রে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকলে বাচ্চাদের ফিডিং করতে সুবিধা হবে। 

ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক ড. মোহা. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, কমনরুম দিতে হলে ফ্যাকাল্টির মধ্যেই দিতে হবে; কিন্তু আমাদের ক্লাশ রুমেরই সংকট রয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে যা অপর্যাপ্ত। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যদি রেজিস্ট্রার বরাবর দরখাস্ত দেয় তাহলে আশা করছি এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী বলেন, আমি আসলে এসব ব্যাপারে জানতাম না। এখন জেনেছি। ইনশাআল্লাহ এ ব্যাপারে দেখব কী করা যায়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম