Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

স্ট্রোক কী? কখন হয়, কীভাবে প্রতিরোধ করবেন? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫১ পিএম

স্ট্রোক কী? কখন হয়, কীভাবে প্রতিরোধ করবেন? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

ফাইল ছবি

স্ট্রোক প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের এই অংশে কার্যক্ষমতা কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। সময় মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে কার্যক্ষমতা স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। রোগী পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়া, কথা বলতে না পারা, মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া বা খিঁচুনিতে আক্রান্ত হওয়া এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। একে ইস্কেমিক স্ট্রোক বলা হয়। 

অন্য আরেক রকম স্ট্রোক হয়, যেখানে মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। সাধারণভাবে যা ব্রেন হেমারেজ নামে পরিচিত। এ রকম স্ট্রোকের উপসর্গ সাধারণত আরও ভয়াবহ হয়। এ ছাড়াও মস্তিষ্কের রক্তনালীর অন্যান্য রোগ থাকার কারণে রক্তপাত হয়ে স্ট্রোক হয়। রক্তনালীর বিশেষ অংশ ফুলে গিয়ে ফেটে যাওয়া, ধমনী ও শিরার অস্বাভাবিকতা থেকেও স্ট্রোক হতে পারে। 

বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক ডা. মওদুদুল হক এসব তথ্য জানান।

স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ, হার্টের নয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অথবা হঠাৎ রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে স্ট্রোক হয়ে থাকে। বিশ্বে পঙ্গুত্বের প্রধান এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর কারণ স্ট্রোক। অথচ অসংক্রামক এই ব্যাধিটি অনেকাংশেই প্রতিরোধযোগ্য।

বিশ্ব স্ট্রোক দিবসে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মিল্টন হলে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্সের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। 

বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ২৯ অক্টোবর স্ট্রোক দিবস পালন করা হয়।একত্রে আমরা স্ট্রোকের চেয়ে বড়’–এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার পালিত হলো দিবসটি।

এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে স্ট্রোক কী তা জানা এবং বোঝা স্ট্রোক কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়, স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর পরিপূর্ণ যত্ন ও উপযুক্ত চিকিৎসা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা।

সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্সের সদস্য সচিব ডা. নুরুজ্জামান খান বলেন, ‘দেশের এন্ডোভাস্কুলার নিউরোসার্জারি হচ্ছে, যেখানে কাঁটাছেড়া হয় না, বরং রক্তনালীর মধ্য দিয়েই এ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সময়ে এই প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। অন্যান্য দেশে নিউরোসার্জারির যেসব অস্ত্রোপচার হচ্ছে, আমরাও বিশ্বমানের সব করছি। বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি বহু সেন্টারে এটি হচ্ছে। এমনকি বিএসএমএমইউতে এটি হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্ট্রোকের রোগীদের জন্য চার ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। এর মধ্যে চিকিৎসার আওতায় না আসলে মস্তিষ্ক অকেজো হতে থাকে। এর আগে যদি চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে রোগী সেরে উঠে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অল্প বয়সিদের স্ট্রোকের অন্যতম কারণ ড্রাগ। সম্প্রতি তরুণ সমাজ একটি সুন্দর বিপ্লব করে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছে। নতুন এ বাংলাদেশে যারা তরুণদের নেশা জাতীয় দ্রব্য তুলে দিচ্ছে, তাদের কঠোরতম শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্সের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মো. জাহিদ রায়হান বলেন, স্ট্রোক নিয়ে ইতিমধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। ফলে লক্ষণ বুঝতে পেরে স্বজনরা রোগীদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসছেন, বাড়িতে বসে থাকছেন না। তারা কোয়াক কবিরাজের শরণাপন্ন হচ্ছেন না, এটা ইতিবাচক।

‘রোগীরা হাসপাতালে ভিড় করছেন। ফলে দিন দিন হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর হার বাড়ছে। এটা উন্নত বিশ্বেরই একটি চিত্র’–বলেন ডা. জাহিদ রায়হান।

বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব বলেন, দেশে নিউরোসার্জারির যে কোনো অপারেশন করা সম্ভব। বাংলাদেশে কয়েকশ’ সুদক্ষ নিউরোসার্জন রয়েছেন, যারা বিশ্বমানের চিকিৎসা দিতে সক্ষম। ভারত, সিঙ্গাপুর, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় যে সার্জারি হয়, যেভাবে করা হয়; আমাদের দেশেও তাঁরা একই প্রক্রিয়ায় অস্ত্রোপচার করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে ও হাসপাতালের (নিন্স) ব্রেইন অ্যান্ড স্পাইন সার্জন ডা. মো. বশীর আহম্মেদ খান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।


Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম