ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পর রাবিতে ‘ছাত্রলীগ স্টাইলে’ বাইক শোডাউন
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৫ এএম
ছবি: যুগান্তর
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ শামসুজ্জোহা চত্বরে মিলিত হয়ে শিক্ষার্থীরা একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন। পরে ক্যাম্পাসের সকল আবাসিক হল প্রদক্ষিণ শেষে সাড়ে ১১টায় একই স্থানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন। সেখানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মিষ্টি ছুড়ে দেন সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার।
একই সময়ে আনন্দ মিছিলে ছাত্রলীগের কায়দায় মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাস শোডাউন দিতে দেখা গেছে একটি গ্রুপকে। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘হৈহৈ রৈরৈ, ছাত্রলীগ গেলি কই’, ‘গণহত্যার সঙ্গী, ছাত্রলীগ জঙ্গি’, ‘ছাত্রলীগ দেখে যা, ক্যাম্পাসে তোর বাপেরা’, ‘ছাত্রলীগের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষর্থীরা বলেন, শুধু ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করলেই হবে না। ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ সহ ১৪ দলের অন্তর্ভুক্ত জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ সকল দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে পরবর্তীতে ছাত্রলীগের মতো কোনো ফ্যাসিবাদী সংগঠন যেন গড়ে উঠতে না পারে সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, ছাত্রলীগের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি। গত ১৫ বছরে তারা যে সকল অপকর্ম করেছে সেগুলো উল্লেখ করে আজ (বুধবার) গেজেটে পাস হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণার এই খুশিতে আমরা এই মিষ্টি বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের বাকি যে চার দফা দাবি ছিলো সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী রাশেদ রাজন বলেন, একাত্তর পরবর্তী সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড একদিকে আর ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড অপরদিকে রাখলে দেখা যাবে তারা কয়েকগুণ বেশি অপরাধ করেছে। এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করে নাই। ফ্যাসিবাদের অন্যতম হাতিয়ার ছিলো ছাত্রলীগ। গণভবন থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি ইঞ্চি মাটি দখল করে তারা অপরাধ কার্যক্রম চালিয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি বাংলাদেশের গণমানুষের দাবি ছিল। ছাত্রলীগকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হোক। সেই সঙ্গে পরবর্তীতে ছাত্রলীগের মতো কোনো ফ্যাসিবাদী সংগঠন যেন গড়ে না উঠতে পারে সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
এর আগে রাত ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় মিষ্টি বিতরণের ঘোষণা দেন সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা জোহা চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। পরে চার শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে তারা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন।