আ.লীগ-ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলে সংঘটিত সব অন্যায় ও জুলাই গণহত্যার বিচার এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ তাদের সব অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া মঞ্চ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রায় ২৫ মিনিটের মতো মহাসড়ক অবরোধ করে।
অন্যদিকে গণঅভ্যুত্থানে সৈনিকদের উপর বর্বরোচিত হামলার অবিলম্বে বিচার ও জঙ্গি সংগঠন ছাত্রলীগকে দেশ থেকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখা। বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে তা বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এসে শুরুর স্থানেই একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
অবরোধকালে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী খালেদ জুবায়ের শাবাব বলেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। এখনো জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধারা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। কিন্তু গণহত্যার সঙ্গে জড়িতরা এখনো বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, আমরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে হটিয়েছি। একটি গোষ্ঠী সেই স্বৈরাচারকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুনিদের বিচার না করে আমাদের নির্যাতিত ভাইদের গ্রেফতার শুরু করেছে। স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনারা যদি জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট ভুলে যান, তাহলে আমরা আবার রাস্তায় নামব।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাবি শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, গত এক সপ্তাহে আমাদের দুজন সহযোদ্ধা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছে। আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ সরকারি পেটোয়া বাহিনী দিয়ে মানুষের উপর গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এর পেছনে ইন্ধন দিয়েছে আওয়ামী লীগসহ ফ্যাসিস্টদের সব অঙ্গ সংগঠন। এগুলো বিক্ষিপ্ত কোনো ঘটনা নয়। তাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। যে সংগঠন সাংগঠনিকভাবে সাধারণ মানুষের উপর হামলে পড়তে পারে তারা জঙ্গি ব্যতীত আর কিছুই নই। অবিলম্বে এই সংগঠন ও তার সব অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলে কিশোরগঞ্জে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীর উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। হামলার শিকার কাউসার আলম আরমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে বুধবার রাতে একটি মশাল মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। পরে তারা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে এবং আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয়।
এর আগে সোমবার সাভারের আশুলিয়ায় সাভারের আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী রবিউস সানী শিপুকে মারধরের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।