পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে আগুন, রাবিতে বিক্ষোভ
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৯ পিএম
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘জাগো রে জাগো, জুম্ম জাতি জাগো’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘আমার পাহাড় জ্বলছে কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমরা সবাই জুম্ম সেনা, ভয় করি না বুলেট বামা’, ‘আদিবাসীদের হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শামিন ত্রিপুরা বলেন, দীঘিনালায় এক মোটরসাইকেল চোর নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা পাহাড়িরা নিজেদের জায়গায়তেই নিরাপদ নয়। পাহাড়ে আমাদের মা-বোনদের প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।
এ সময় তিনি পাহাড়ের সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত ও নিরাপত্তার দাবি জানান। একইঙ্গে উচ্চ আদালতে এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেন তিনি।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী চেসি ত্রিপুরা বলেন, আমরা মেয়েরা পাহাড়ে নিরাপদ নই। কোনো একটা জায়গায় বের হতে গেলেই ইভটিজিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোশানলে পড়তে হয়। কিছুদিন আগে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় একটা ধর্ষণ হয়েছে। সেই ধর্ষণের বিচারের দাবিতে আমরা যখন আন্দোলন করতে যাই, তখন আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে যারা সেটেলার (যাযাবর) বাঙালি আছে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। এখানে সাম্প্রদায়িক হামলা কেন হবে? আমরা তো ধর্ষণের বিচারের দাবি করেছিলাম। আমরা তো কখনো তাদের বিরুদ্ধে ছিলাম না। তাহলে তারা কেন আমাদের ওপর হামলা করবে? এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী তাদেরকে সব সময় ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পাহাড় থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি।
বিক্ষোভ সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বিজয় চাকমা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রায় দুই শতাধিক পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার লারমা স্কয়ার এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক পর্যায়ে পাহাড়িদের দোকান ও ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরা।