Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

বিপাকে খুলনার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যসহ আ.লীগপন্থি শিক্ষকরা

Icon

নূর ইসলাম রকি, খুলনা

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৪:১৬ পিএম

বিপাকে খুলনার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যসহ আ.লীগপন্থি শিক্ষকরা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে খুলনার তিনটি বিশ্ববিদ্যালযয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন দুর্বৃত্তকারীরা। এরপর থেকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (খুকৃবি) এবং শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় খুলনায় যাননি উপাচার্যসহ আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতারা। মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যাচ্ছে না তাদের সঙ্গে। সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে বিপাকে পড়ছেন তারা সবাই। রাজনৈতিক চাপে অনেকেই এলাকা ছাড়া হয়ে গেছেন। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, উপ-উপচার্য, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) কোনো ভাঙচুর হয়নি। নিয়মিত ক্যাম্পাসে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য। 

জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। এ ছাড়া খুকৃবির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর করা হয় এবং কুয়েটে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। ওই দিনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে উপাচার্য, উপ-উপচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রারসহ আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্রলীগের নেতার ক্যাম্পাসে যাইনি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আজ অনেকেই ক্যাম্পাসে যাবেন বলে জানা গেছে। 

কুয়েটের সূত্র জানায়, প্রশাসনিক ভবনের আওয়ামী লীগপন্থি অনেক কর্মকর্তা ক্যাম্পাস ছাড়া। তাদের সাথে মোবাইলেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কুয়েটের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সোবহান মিয়ার মোবাইল বন্ধ। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মোবাইল বন্ধ। নিয়মিত অফিস করছেন বিএনপি-জামায়াতপন্থি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। কুয়েটের শিক্ষার্থী, এলামনাই, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন। আগামী ১২ আগস্ট তারা এই দাবির প্রেক্ষিতে প্রসানিক ভবনের সামনে অবস্থান করবেন। 

এদিকে খুকৃবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল কাশেম, ট্রেজারার প্রফেসর সারোয়ার আকরাম আজিজের পদত্যাগসহ রেজিস্ট্রার ডা. খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের অব্যাহতির দাবি জানিয়েছে। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হননি। তবে খুলনার সুধীজনরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। তার মনে করেন, রাজনৈতিক মতাদর্শের আদর্শ থেকেই সেহেতু পদগুলো পাওয়া সেহেতু দল না থাকায় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিত সকলকে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, যে সকল শিক্ষক ও কর্মকর্তা তাদের আন্দোলনের সময় পাশে ছিল না, তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন। 

কুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হালদার যুগান্তরকে বলেন, আমি ক্যাম্পাসে নাই। ছুটি নেওয়ার সময় মেকানিক্যাল বিভাগের ডিন প্রফেসর ড.  মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামকে দায়িত্ব দিয়ে এসেছি। এই মুহূর্তে আমি পদত্যাগ করলে সকল কর্মকর্তা কর্মচারী বিপদে পড়তে পারে। তবে আপাতত ক্যাম্পাসে যাচ্ছি না। খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল কাশেম যুগান্তরকে জানান, রাষ্ট্রপতি আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন। এখনই পদত্যাগ করছি না। বর্তমান সরকারের নির্দেশনা মেনে চলব। 

শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় খুলনার উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমরা প্রজাতন্ত্রের চাকরি করি। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ দেব না। তবে সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই মেনে নেব। আমার অফিসে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হাসান যুগান্তরকে জানান, আমার ক্যাম্পাসে কোনো হামলা ঘটনা ঘটেনি। আমি নিয়মিত অফিস করছি। কোন আতঙ্ক বা সমস্যা মনে হচ্ছে না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম