শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নীরবতা
মেরুদণ্ড যুক্ত শিক্ষক চেয়ে জবি শিক্ষার্থীদের ব্যঙ্গ বিজ্ঞপ্তি
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান না নেওয়ায় ফেসবুকজুড়ে নানা পোস্টে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে নিন্দা জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কেউ আত্মার মাগফিরাত জানাচ্ছেন আবার কেউ মেরুদণ্ড যুক্ত শিক্ষক চেয়ে ব্যঙ্গ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পোস্ট দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়ানোর পর জবি শিক্ষকদের নিশ্চুপতা নিয়ে এ নিন্দা আরো বেড়েছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ফেসবুকজুড়ে শিক্ষকদের সমালোচনা করছেন।
এদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাবি শিক্ষকদের লাল কাপড় বেধে করা সমাবেশের ছবি দিয়ে সাব্বির রহমান নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘তারাই হলেন প্রকৃত শিক্ষক। অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মেরুদণ্ডহীন শিক্ষকদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
আরেক শিক্ষার্থী নাঈমা আক্তার রিতা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায়না, আমি তাকে ঘৃণা করি।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তৈমুর মুবিন লিখেছেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
ইশরাত জেরিন পায়েল নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘জবির যেসব শিক্ষকরা এতদিন নিজেদের শিক্ষার্থীবান্ধব বলতেন ক্যাম্পাস খুললে আমাদের সাথে দৃষ্টি মেলাতে পারবেন তো?’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল প্যাডের অনুরুপ প্যাড তৈরি করে ‘জরুরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ও বানিয়েছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে তারা লিখেছেন, জবির শিক্ষার্থীদের সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, পর্যাপ্ত পরিমান মেরুদণ্ডযুক্ত শিক্ষক -শিক্ষিকা না থাকায় জরুরি ভিত্তিতে মেরুদণ্ড যুক্ত ও শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষক-শিক্ষিকা আবশ্যক। সিজি একটু কম হলেও হবে তবে বিবেকসম্পন্ন মেরুদণ্ডী মানুষ হতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মমিন উদ্দিন বলেন, ঢাবি ও জাবিতে শিক্ষকরা ব্যক্তিগতভাবে তাদের মৌন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এ ধরণের প্রোগ্রাম করার আগে মিটিং করে অনুমতি নিতে হয়। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ ধরণের কর্মসূচি পালন করলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না।
জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, শিক্ষক সমিতি নয়, ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক শিক্ষক রাস্তায় নেমে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেছেন বলে জানি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আমাদের সমর্থন রয়েছে। আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি ইতোমধ্যেই পূরণ হয়েছে। তাদের অন্যান্য দাবিও মেনে নেওয়া হচ্ছে। ফলে আন্দোলন শেষ করা উচিত। এছাড়া আহত ও আইনি ঝামেলায় পড়া শিক্ষার্থীদের সাহায্য-সহযোগিতা করে পাশে থাকবে শিক্ষক সমিতি।