রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নতুন সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের অনুমোদনে ১৭ সদস্যর এ কমিটির তালিকা ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়েছে।
নতুন কমিটির বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক এবি জুবায়ের যুগান্তরকে বলেন, রাবিতে পূর্বের যে কমিটি ছিল সেটা কোনো একটা কারণে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এরপর কিছু সুযোগসন্ধানী লোক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কোনো পদ বা সমন্বয় কমিটিতে না থেকেও নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে সংবাদ সম্মেলন একটা বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করে। সংবাদ সম্মেলনে তারা সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা করে। আসলে এরা কোনো আমাদের কোনো সমন্বয়ক ছিল না। বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় তাই আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে কমিটি দিয়েছি। যারা পূর্ব থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কেন্দ্র থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এই কমিটি।
সমন্বয়ক কমিটির সদস্যরা হলেন- গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী মিশু, আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা, উর্দু বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন্না, ইলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী নওসাজ জামান, সিরামিক অ্যান্ড ভাস্কর্য বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ রিদম, সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব।
এছাড়াও দর্শন বিভাগের ফুয়াদ উল ইসলাম ভুইয়া রাতুল, বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের এফআরএম ফাহিম রেজা, আইইআর বিভাগের বর্ষের শিক্ষার্থী তাসিন খান, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের মেহেদী হাসান মারুফ, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের ফৌজিয়া নৌরিন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সালাহউদ্দিন আম্মার, আইন বিভাগের মৃত্তিকা, আরবি বিভাগের মাহাদী হাসান মাহির, ক্রোপ সাইন্স বিভাগের নুরুল ইসলাম শহিদ- এরা সবাই ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায় অনুষদের ২০২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থী আতাউল্লাহ।
নবগঠিত সমন্বয়ক কমিটির সদস্য গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী মিশু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সমন্বয়ক ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন চলার কারণে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। আর কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় কেন্দ্রের সঙ্গে পরামর্শ করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাবিতে এই সমন্বয়ক কমিটির সিদ্ধান্তেই পরবর্তী কর্মসূচি পালিত হবে।
এর আগে, গত ৭ জুলাই রাবিতে ১১ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় না করে কর্মসূচি দিতে না পারার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই কমিটির সদস্যদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। ফলে ১২ জুলাই থেকে সমন্বয়ক ছাড়াই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামক ব্যানারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছিল।
১৭ জুলাই থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পর থেকেই রাবি ক্যাম্পাস ফাঁকা হতে থাকে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীদের একাংশ সরকারকে এক মাসের আলটিমেটাম দিয়ে রাবির সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীদের অন্য অংশ। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ রোববার কেন্দ্র থেকে ১৭ সদস্যের নতুন সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।