Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

কোটা বাতিলের দাবিতে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন 

Icon

বাকৃবি প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম

কোটা বাতিলের দাবিতে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন 

কোটা বাতিলের দাবিতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি : যুগান্তর

বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। 

এ সময়  কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই ইত্যাদি কোটাবিরোধী স্লোগান দেন। 

সমাবেশ শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি মেনে না নিলে লাগাতার আন্দোলন চালবে। 

বিক্ষোভ সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোনো সরকার বিরোধী আন্দোলন করছি না। দেশের সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিও রয়েছে আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান এবং আমরা চাই দেশের মুক্তিযোদ্ধারা সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা এবং সম্মান নিয়ে এই বাংলার বুকে বেঁচে থাকুক। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নাম করে তাদের নাতি-নাতনীরা শিক্ষা কিংবা চাকরি ক্ষেত্রে কোটার নামে যেসকল সুবিধা পেয়ে আসছে আমরা সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের এই যুগান্তকারী সময়ে আমরা কোটা বৈষম্যের স্বীকার হতে চাই না। 

বাকৃবির মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী মিশু মোর্শেদ বলেন, আমরা স্বাধীনতার পক্ষে। স্বাধীনতার ৫৩বছর পর এসেও কেনো চাকুরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের এত সুযোগ দিতে হবে? তাদেরসহ অন্যদের সুযোগ দিতে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ অবহেলিত। সকল শিক্ষার্থীকে তাদের মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হোক। 

এসময় আন্দোলনে আসা শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান তানজিল বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শব্দটাকে বিচ্ছেদ করলে আমরা শুধু মুক্তিই পাই, কোথাও বৈষম্য দেখতে পাই না। স্বাধীনতার এতোগুলো বছর পরে এসেও নতুন করে কোটা বৈষম্য তৈরী করা হলে সেটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথেই সাংঘর্ষিক। 

তিনি বলেন, দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালির যে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটেছিলো আজকে কোটা দিয়ে বৈষম্য তৈরির মাধ্যমে আমাদের সেই অর্জনকেই মলিন করে দেয়া হয়েছে বলে মনে করি। তাছাড়া আমরা জানি কোটা মূলত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের একটা মাধ্যম। 
তিনি আরও বলেন, জেলা কোটা এবং পোষ্য কোটা এই ধরনের সংক্রামক ব্যাধিকে অতিদ্রুত আমরা বাংলার মাটি থেকে চিরতরে বিদায় জানাতে চাই। বিশেষ বিবেচনায় অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা যেতে পারে তবে সেটা কখনোই ৫% এর বেশি হওয়া উচিত নয় এবং তার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য। 

আরেক শিক্ষার্থী নূর-ই-হাফিজা বলেন, বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর চাকরিগুলোতে একজন যোগ্য প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ একজন যোগ্য পাবলিক সার্ভেন্ট দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে একজন অযোগ্য মানুষ তা পারবেনা এবং দেশ খুব দ্রুতই ধ্বংস করবে। মেধার যথাযথ সম্মান যে দেশে করা হবে না সে দেশ মেধাশূণ্য হয়ে যাবে অচিরেই। স্বাধীনতার এত বছর পরেও এত বৈষম্য যে আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এর চেয়ে লজ্জাজনক হয়ত আর কিছু হতে পারে না। 

আল্টিমেটাম দিয়ে আরেক শিক্ষার্থী মো. ইরান মিয়া বলেন, ৩০ জুনের মধ্যে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল না করলে সারা বাংলার ছাত্রসমাজ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। তবে প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা যেতে পারে। 

উল্লেখ্য, গত বুধবার সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। পরদিন থেকেই ওই রায়ের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। 

ক্যাপশন:

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম