অভিযুক্ত জাবি কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ। ছবি- যুগান্তর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) হিসাবাধ্যক্ষ অফিসের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিজ কক্ষে অবৈধভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম ফিরোজ আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী কম্পট্রোলার (হিসাবাধ্যক্ষ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, কম্পট্রোলার, ডিন, বিভাগীয় প্রধান, ইনস্টিটিউট প্রধান, হল প্রভোস্ট এবং কিছু অফিস প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে অফিস কক্ষে এসি লাগাতে পারেন। এর বাইরে, জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বা শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ এমন কারো যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে নিজ খরচে এসি লাগাতে পারবেন। এছাড়া কেউ চাইলেই তার কক্ষে এসি লাগানোর নজির বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।
এ অবস্থায় সহকারী হিসাবাধ্যক্ষ পদমর্যাদার কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ কীভাবে তার কক্ষে বিলাসী এই পণ্য ব্যবহারের অনুমতি পেলেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহারের সুযোগ পাননি। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী হিসাবাধ্যক্ষের কক্ষে এসি লাগানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
আবার কেউ কেউ বলছেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারের ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় এসি ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন সহকারী হিসাবাধ্যক্ষ ফিরোজ আহমেদ। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক মহলে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
সহকারী কম্পট্রোলারের কক্ষে এসি লাগানোর খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে জাবি অফিসার সমিতির সাবেক সভাপতি ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আজীম উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের যে নীতিমালা আছে, সেখানে একজন অফিসার কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন, সব উল্লেখ করা আছে। একজন সহকারী কম্পট্রোলার এসি ব্যবহার করতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটি অন্যায়ভাবে অনুমতি দিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী কম্পট্রোলার ফিরোজ আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানে আমার কিছু বলার নেই। ভাইস চ্যান্সেলর স্যারের অনুমোদন নিয়ে পুরোনো এসি লাগানো হয়েছে। যেকোনো ফাইলের সুপারিশ আমি করি। নোটিশে বলা ছিল, স্যারের মৌখিক নির্দেশে এসিটি লাগানো হয়েছে। স্যার যখন মৌখিক নির্দেশ দেন, তখন সুপারিশ দিতেই হবে। আমি সুপারিশ দিয়েছি, স্যার অনুমোদন দিয়েছেন। পরবর্তীতে এসিটি খুলে ফেলার জন্য স্যার আবার নির্দেশ দিয়েছেন। স্যার যখন মৌখিক অনুমোদন দেন, আমাকে তখন সুপারিশ দিতেই হয়।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।