Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

জাবি ছাত্রীকে হেনস্তা, মৌমিতা পরিবহণের ১৬ বাস আটক

Icon

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ১০:৫২ পিএম

জাবি ছাত্রীকে হেনস্তা, মৌমিতা পরিবহণের ১৬ বাস আটক

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি চেষ্টার প্রতিবাদে মৌমিতা পরিবহণের ১৬টি বাস আটকে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল থেকে বাসগুলো আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে মঙ্গলবার সাভার থেকে মৌমিতা বাসে ফেরার পথে রেডিও কলোনি এলাকায় হেনস্তার শিকার হন ওই ছাত্রী। এ ঘটনায় বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে তিনি।

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, আমি মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ব্যাংক টাউন থেকে টিউশন করিয়ে মৌমিতা বাসে করে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে আসছিলাম। বাসের হেলপার বাস ভাড়া চাইলে আমি টাকা দেই। হেলপার বলে তার কাছে ভাংতি নাই, পরবর্তীতে আমাকে ভাংতি টাকা ফেরত দিবে; কিন্তু বাস রেডিও কলোনির কাছাকাছি আসার পর হেলপার জানায় বাস আর সামনে যাবে না। বাসের যাত্রীরা সবাই তখন নেমে চলে যান।

আমি তখন হেলপারকে ভাংতি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বললে হেলপার বলেন- আপনাকে ঢাকা নিয়ে যাই। ঢাকা নিয়ে যাবে বলেই তারা আমাকে বাজেভাবে ইঙ্গিত দেয়। তখন বাসে মাত্র তিনজন লোক ছিল। আমি খুব ভয় পেয়ে যাই এবং বাস থেকে লাফ দিতে গেলে হাঁটুতে ব্যথা পাই। এ ঘটনার পরে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। আমার ব্যাচমেটদের বিষয়টি জানালে ওরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

এ ঘটনার জেরে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেট) এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী মৌমিতা পরিবহণের ১৬টি বাস আটক করেন শিক্ষার্থীরা। তবে আটককৃত বাসের চালক ও হেলপারদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন বাস কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বন্ধু ও প্রাণরসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা জানান, গতকালের ঘটনার প্রতিবাদে আমরা মৌমিতা পরিবহণের বাস আটকিয়েছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যার ও আশুলিয়া থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি; কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সব সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত সময়ের কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

আটককৃত বাসের চালক মোজাম্মেল ও হেলপার বাবলু জানান, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আমাদের বাসগুলো ছাত্ররা আটক করেন। ঘটনা আমরা জানতাম না। ছাত্ররা বাস আটকে আমাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে নেয়। তখন আমরা বলি, আপনারা বাস আটকান সমস্যা নাই। বাস মালিকের সম্পত্তি, কিন্তু ফোন তো আমাদের ব্যক্তিগত জিনিস। এ সময় ফোন না দেওয়ায় আমাকে চড় থাপ্পড় মেরে ফোন ছিনিয়ে নেন তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মনির উদ্দিন শিকদার বলেন, আমরা আশুলিয়া থানার পুলিশসহ ছাত্রদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি; কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কোনো ঘটনা শনাক্ত করতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা খুব সিরিয়াসলি বিষয়টা দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বাদী হয়ে মামলা করবেন। ঘটনা সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত বাসগুলো এখানেই থাকবে।

তবে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, উত্তেজিত অবস্থায় ছাত্ররা এ কাজ করেছে। পরে আমি উপস্থিত হয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে মোবাইলগুলো ফিরিয়ে দিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির বলেন, ছাত্ররা ও আশুলিয়া থানার পুলিশসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি; কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা কিছুই শনাক্ত করতে পারি নাই। আমরা বাস কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ওই বাসের হেলপার ও চালককে শনাক্ত করে আমাদের জানাতে বলেছি। পুলিশও চেষ্টা করছে তাদের শনাক্ত করার জন্য।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম