Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

১২ মে খুলছে চুয়েট, শিক্ষার্থীরা থাকতে পারবেন হলে

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও রাউজান প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩১ পিএম

১২ মে খুলছে চুয়েট, শিক্ষার্থীরা থাকতে পারবেন হলে

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশের একদিন পরই সিদ্ধান্ত আংশিক পরিবর্তন করেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় হলত্যাগের নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তবে বহাল রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত। আগামী ৯ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। এর পরের দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ১২ মে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে।

একইসঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত ও এর জের ধরে চারদিন ক্যাম্পাসে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তদন্তে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে চুয়েট ভিসি ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের সভা শুরু হয়। শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টার দিকে। ওই সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ক্যাম্পাসে উপস্থিত সাংবাদিকদের সভার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

এদিকে শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হল থেকে বেরিয়ে শহীদ মিনার ও ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। বিশ্ববিদ্যালয় ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। একইসঙ্গে ফের আন্দোলন শুরুরও হুঁশিয়ারি দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, তারা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত মানেন না। রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বৃহস্পতিবার চুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদের বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা এবং ছাত্রীদের শুক্রবার সকাল ৯ টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা হলেই অবস্থান নেন। হলত্যাগ না করে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বিক্ষোভ করেন তারা। দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে  ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী ২০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের  বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। অবরোধ তুলে নেওয়া হলে  চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে আন্দোলনের মুখে দিনভর এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর রাতে শিক্ষার্থীরা জানান, চালককে গ্রেফতারের দাবি পূরণ হয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তহবিল গঠন করার আশ্বাস দিয়েছে। যেখানে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, সব শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সহযোগিতা করবেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক প্রশস্ত করার বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হবে। এসব আশ্বাসের পর আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আন্দোলন স্থগিতের পর ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত হয়ে আসে। শুক্রবার নতুন করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে আন্দোলন স্থগিত করার কারণে শুক্রবার সিন্ডিকেট সভা আহবান করে কর্তৃপক্ষ। ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের আগের দিনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। তবে ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া হলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করতে পারবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকায় মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী। শাহ আমানত পরিবহণের একটি দ্রুতগতির বাস শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তওফিক হোসেন। আহত অপরজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার দিন থেকেই এ ঘটনার বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। চার দিন ধরে চলা এ আন্দোলন স্থগিত করা হয় বৃহস্পতিবার রাতে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম