উপাচার্যের আশ্বাসে জাবিতে অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৪, ০৭:২১ পিএম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম তিন কার্য দিবসের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় পাঁচ দফা দাবিতে চলমান অনির্দিষ্টকালের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেছে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের আন্দোলনকারীরা।
বুধবার বিকালে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান আন্দোলনকারীরা।
এর আগে বুধবার সকাল ৯টায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা। পূর্বের দিনের মতো এদিনও প্রশাসনিক ভবনে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়া আসেননি উপাচার্যও। ফলে প্রশাসনিক ভবন গত তিন দিন ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে দুপুরের দিকে বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনিক ভবনের সামনেই সমস্যা সমাধানে আলোচনায় বসেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে ডিনদের মধ্যস্থতায় বিকাল ৩টায় আলোচনায় বসে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের আন্দোলনকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের পক্ষে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল। সেখানে আগামী ১৮ তারিখ দুপুর পর্যন্ত প্রক্টর ও প্রভোস্টের অব্যাহতির বিষয়ে সময় চেয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে মধ্যে প্রক্টর ও প্রভোস্ট স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট অনুসারে উপাচার্য তাদের অপসারণ করবেন।
এছাড়া অছাত্রদের তালিকা তৈরি ও মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে কি আলোচনা হয়েছে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে পারভীন জলী বলেন, উপাচার্য বলেছেন অছাত্রদের তালিকা ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। ১৮ তারিখের পরে তিনি আমাদের হাতে তালিকা হস্তান্তর করবেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবেন বলে জানিয়েছেন। যদি ১৮ তারিখের মধ্যে আমাদের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়ন না করেন তাহলে আমরা আমাদের কর্মসূচি পরবর্তীতে পুনরায় অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখব।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, তিন দিনের অবরোধের পর ভিসি আমাদের সঙ্গে মিটিং করেন আজ। তিনি আমাদের কথা দিয়েছেন ১৮ তারিখ দুপুরের আগেই আমাদের দাবির ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবেন। প্রভোস্ট এবং প্রক্টরকে সরিয়ে দিবেন। যদি তা না করেন তাহলে আমাদের আবার অবরোধ করতে বলেছেন। তাই আমরা তার প্রতি আস্থা ও সম্মান রেখে আন্দোলন আপাতত মুলতবি রাখছি। যদি তিনি তার কথা না রাখেন তাহলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে এবং এর সব দায়ভার প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের আহবায়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামছুল আলম, নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সদস্য-সচিব মাহফুজুল ইসলাম মেঘ প্রমুখ।