বাকি টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিন মালিকের দাড়ি ছিঁড়লেন ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা!
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৬ পিএম
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত হোসাইন অভি ও ভুক্তভোগী ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) খাবারের বকেয়া টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিন মালিককে মারধর করে দাড়ি ছিঁড়ে ফেলেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।
সোমবার দুপুরে সূর্যসেন হলের ক্যান্টিনে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম আরাফাত হোসাইন অভি। তিনি হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী ক্যান্টিন মালিকের নাম ফাহিম হোসেন।
জানা যায়, ক্যান্টিনে দুপুরে খাবার খেতে গেলে বকেয়া টাকা চান ক্যান্টিন মালিক ফাহিম। এটা শুনেই ক্ষেপে যান আরাফাত। ক্যান্টিন মালিক ফাহিমকে কিল-ঘুসি মারেন এবং দাড়ি ছিঁলে ফেলেন। পরে হলের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
ক্যান্টিন মালিক ফাহিম বলেন, দুপুরে খাবার শেষে আমি আরাফাতকে বললাম ভাই বিলটা দেন। এর আগেরও কিছু বিল আছে। এরপর তিনি বলেন, ‘পরে দিমু তোমারে, লিখা রাখো’। এরপর আমি তাকে বলছি, আচ্ছা লিখে রাখছি। এটাই তার সঙ্গে আমার কথা শেষ। পরে ম্যানেজারকে বলেছি, তার (আরাফাত) ৬টা খাবারের সঙ্গে এই বিলটা লিখে রাখ। পরবর্তীতে উনি আর বাকি খাইবেন না। দুই-তিন মিনিট পর আরাফাত ফিরে এসে আমাকে বলেন, ‘এই ফাহিম এদিকে আয়’। যাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘কার লগে কিভাবে কি কইতে হয় জানস না?’ তখন আমি বললাম, আমি কি কইছি ভাই? আমি তো বিলটা চাইলাম খালি। ‘আমি কইছি না, বিল আমি পরে দিমু’- এটা বলেই আরাফাত আমার দাড়ি ধরে একমুঠ দাঁড়ি ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। আমাকে ও ম্যানেজারকে কিল, ঘুসি, লাথি দেওয়া শুরু করেন।
এ ঘটনায় সূর্যসেন হল প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন ক্যান্টিন মালিক ফাহিম।
অভিযোগের বিষয়ে আরাফাত বলেন, দুপুরে খাবার খেতে গেলে ক্যান্টিন মালিক বকেয়া টাকা চাইলে তাকে বলেছি- আমার বিকাশে সমস্যা, টাকা তুলতে পারছি না। আমি প্রমাণও দেখাইছি। পরে আমি সেখান থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ম্যানেজারকে বলেন, ‘আমাকে যেন নেক্সট টাইম খাবার না দেয়।’ এটা শুনে আমি ক্যান্টিন মালিককে বললাম- আপনি এটা কেমন কথা বললেন, সমস্যা তো থাকতে পারে। এরপর হঠাৎ করে তিনি আমাকে ধাক্কা মারেন, আমিও তার কলার টেনে ধরি। তারপর ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার দাড়িতে আমার হাত লেগে ছিঁড়ে যায়। তিনি আমাকে প্রথম ধাক্কা দেন। আমি কোনো মারধর করিনি।
সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। এরপর অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি করে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেব।