Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

Icon

ঢাবি প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম

জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংঠনগুলো। রোববার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ভিন্ন ভিন্ন ব্যানারে এসব মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

দুপুর ২টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী অদিতি ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন এক জায়গায় এমন ঘটনা পুরো দেশের জন্য লজ্জাজনক। আমাদের বাবা-মারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায় আমাদের উচ্চশিক্ষার জন্য। কিন্তু এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমন অবস্থা যে সেখানে মানুষ হওয়ার কোনো উপাদান অবশিষ্ট নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ধর্ষণের সাথে যুক্ত সকলের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রদক্ষেপ না নেয় তাহলে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।

এরপর বিকাল ৪টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রডাক্ট হচ্ছে এই ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত থাকা ব্যক্তিরা। আমরা দেখেছি, ২০১৮ সালে নির্বাচনের পর পর নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কেমন করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটানো হলো। সেই ঘটনায় বিচার হয় নাই। সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করল ছাত্রলীগের নেতারা। সেই ঘটনায়ও বিচার হয় নাই। এমনিভাবে শনিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণকাণ্ড ঘটিয়েছে। এমন খবর প্রচারিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে শেল্টার দিয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা করেছিলি। কিন্তু সৌভাগ্যের বিষয় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হল পাহারা দিয়ে ধর্ষকদের গ্রেফতার করতে সহায়তা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের ভাইয়েরা শুনুন, আপনারা বলেন ব্যক্তির দায় সংগঠন নিবে না। তাহলে ওই সংগঠনের দায়ভার কারা নিবে? যারা যৌন নিপীড়ক তৈরি করে, যে সংগঠন হলে দখলদারিত্ব করে, ধর্ষক তৈরি, যে সংগঠন দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। ওই সংগঠনের দায়ভার কে নিবে? এই সংগঠনের সবকিছুর দায়ভার শেখ হাসিনাকে নিতে হবে। ব্যক্তির দায় সংগঠন নিবে না বলে যারা ওই ব্যক্তিকে ধর্ষক হিসেবে গড়ে তুলেছে তারা পার পেতে পারে না। অভিভাবকদের অনুরোধ করব, আপনার সন্তানকে ছাত্রলীগের অপছায়া থেকে দূরে রাখুন। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের ক্ষমতার কাঠামোর মধ্য দিয়ে যে অন্যায় করেছে সেই অন্যায়ের কোনো প্রায়শ্চিত্ত হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ব্যবহার করে ছাত্রলীগ ধর্ষণ করেছে এই ধর্ষকদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ধর্ষণের সহযোগীদের দ্রুত সময়ে গ্রেফতার করতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলকে ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব মুক্ত করতে হবে।

এরপর বিকাল ৫টায় বংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ রাজু ভাস্কর্যের সামনে একই ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগের হাতে ক্যাম্পাসের কোনো শিক্ষার্থী নিরাপদ নয়। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করেছে। মাদকের রাজত্ব কায়েম করেছে। শনিবার জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রাবাসে স্বমীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগের নেতারা। ছাত্রলীগ প্রতিটি ক্যাম্পাসে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কারণ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে তারা ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ছাত্রলীগের কিছু কুলাঙ্গার ধর্ষণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আজও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই। আওয়ামী সরকার বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ দিয়ে দখলদারিত্ব কায়েম করে ধর্ষক তৈরি করছে। এই ছাত্রলীগের হাতে লেগে আছে আবরারের রক্ত, এই ছাত্রলীগের হাতে লেগে আছে বিশ্বজিতের রক্ত। ছাত্রলীগ আর কোনো ছাত্রবান্ধব কাজে যুক্ত নেই। অবিলম্বে জাহাঙ্গীর নগর ধর্ষণকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

মানবন্ধন শেষে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না। যেই হাত ছাত্রলীগের, সেই হাত সন্ত্রাসীদের। শিক্ষা ছাত্রলীগ, একসাথে চলে না। মিছিলে  এসব স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম