জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হলে বসবাসকারী বিড়াল ও অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণী অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন। এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন জাবি শাখা।
গত ২৯ মে জাহানারা ইমাম হলের প্রভোস্ট ড. মুরশেদা বেগম কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হলের মধ্যে যারা বিড়াল ও অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণী (যদি থাকে) পুষছেন, তাদের আগামী ৫ জুনের মধ্যে সেসব প্রাণী হলের বাইরে রেখে আসার জন্য বলা হলো। অন্যথায় ৬ জুনের পর থেকে হল প্রশাসন হলে বসবাসরত ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিড়াল ও অন্য চতুষ্পদ প্রাণী (যদি থাকে) অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ওই বিজ্ঞপ্তির ফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে। এর মাঝে ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন জাবি শাখার পক্ষ থেকে বুধবার জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, প্রশাসন ছাত্রীদের বিড়াল বা যেকোনো চতুষ্পদ প্রাণী পালনে প্রয়োজনীয় বিধি আরোপ করতে পারেন কিন্তু হলে অনেক মালিকানাবিহীন বিড়াল ও অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণী আছে যারা হলপ্রাঙ্গণে ঘোরাফেরা ও শিক্ষার্থীদের কাছে মাঝেমাঝে খাদ্য গ্রহণ করলেও ব্যক্তিমালিকানাধীন নয়; প্রাণিকল্যাণ আইন ২০১৯ যাদের মালিকবিহীন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং একই আইনে ধারা ৭ অনুযায়ী এই প্রাণীদের অপসারণ বা নিধন করা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
স্মারকলিপিতে হলে বসবাসকারী ব্যক্তিমালিকানাহীন বিড়াল ও অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণী অপসারণ করা হবে না বলে তারা আশা ব্যক্ত করেন ও শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিক্ষা পরিবেশের সাথে প্রাণীর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদানের জন্য ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন সদাপ্রস্তুত থাকবে বলে জানান হয়।
এ বিষয়ে জাহানারা ইমাম হলের প্রভোস্ট ড. মুরশেদা বেগম বলেন, হলে থাকা বিড়াল অনেক সময় ছাত্রী ও কর্মচারীদের আঁচড় দেয়। এ ঘটনায় কয়েকজন আমাকে অভিযোগ দিয়েছেন। যেসব ছাত্রী আবাসিক হলে বিড়াল পুষছেন, তারা যাতে আর হলে বিড়াল না পোষেন, সে বিষয়ে আমি তাদের জানিয়েছি। বিড়ালগুলোর কারণে হল ও ডাইনিংয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সবার কথা চিন্তা করে একরকম বাধ্য হয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া বলেন, একটি নির্দিষ্ট এলাকা বা প্রতিষ্ঠানে প্রাণী পোষার অনুমতি না থাকতেই পারে। একই সঙ্গে বন্যপ্রাণীর ক্ষেত্রে যেমন অপসারণের জন্য ওয়ার্ডেনের হস্তক্ষেপ বাধ্যতামূলক, তেমনি সামাজিক প্রাণী হিসাবে এই বিড়ালগুলোর জন্য কর্তৃপক্ষের অপসারণ প্রক্রিয়া কী হতে পারে, প্রাণিকল্যাণ আইন অনুযায়ী ক্যাম্পাসে বসবাসকারী পথপ্রাণী বা সামাজিক প্রাণীগুলোর সঙ্গে সহাবস্থান তৈরিতে কী ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, এ ব্যাপারগুলোও নিশ্চিত হওয়া একান্ত জরুরি।