Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

ছাত্রদলের দুই নেতাকর্মীকে পেটালেন রাবি ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা

Icon

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম

ছাত্রদলের দুই নেতাকর্মীকে পেটালেন রাবি ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা

বিএনপির মিছিলে যাওয়ায় শাখা ছাত্রদলের দুই নেতাকর্মীকে পেটানোর পাশাপাশি এক নেতাকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী এক নেতা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে টুকিটাকি চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা হলেন শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সদস্য শেখ নূর উদ্দিন আবির, তুষার শেখ ও আর রাফি খান। এদের মধ্যে শেখ নূর উদ্দিন আবির ও আর রাফি খান বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের এবং তুষার শেখ ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী। শেখ নূর উদ্দিন আবির বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন- শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা সাবিকুল হাসান বাকি ও তার অনুসারী হাবিব আদনান। ঘটনার সময় সাকিবুল হাসান বাকির সঙ্গে তার কয়েকজন কর্মীও ছিল বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা শেখ নূর উদ্দিন আবির জানান, যারা আমার ওপর হামলা করেছে তারা আমার বিভাগের বড় ভাই। তারা আমাকে ফোন দিয়ে বিভাগের সামনে যেতে বলে। পরে এক ছোট ভাইকে দিয়ে মোটরসাইকেল পাঠায়। মোটরসাইকেলে যাওয়ার পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ বলেই তারা আমার ওপর হামলা চালায়। হাবিব নামের একজন আমাকে কিল-ঘুসি মারতে থাকে এবং বাকি ভাই আমাকে বাঁশ দিয়ে পায়ের গোড়ালিতে মারতে থাকে। একপর্যায়ে বিভাগের ছোট ভাইয়েরা আমাকে রিকশায় তুলে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের হাতে তুলে দেন।

ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা আবির বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের চার নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে জানিয়ে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সদস্য এমএ তাহের রহমান বলেন, সাকিবুল হাসান বাকির নেতৃত্বে তার অনুসারী হাবীব আদনান তাকে পিটিয়েছে। আবিরের ঠোঁট ফেটে গেছে আর সে তার পায়ের গোড়ালিতে এবং কোমরে আঘাত পেয়েছে। বর্তমানে তাকে ব্যথানাশক ইনজেকশন দিয়ে রাখা হয়েছে। মারধরের শিকার আরেক শাখা ছাত্রদল কর্মী রামেকে আসেননি। বিষয়টি নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে তার বসার কথা রয়েছে।

পেটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাকিবুল হাসান বাকি বলেন, গত পরশুদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল, সেই কর্মসূচিতে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাইদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। সেই কর্মসূচিতে রাবি শাখা ছাত্রদলের ব্যানারে কিছু নেতাকর্মী যায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আনন্দ উল্লাস করে। সেই কারণেই আজকে আমাদের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল। মূলত ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ছাত্রদলকে প্রতিহত করাই আমাদের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল। তাই বিভাগের সামনে বিএনপির সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সদস্যকে পেয়ে আমার ছোট ভাইয়েরা তাকে মারধর করে।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, সাকিবুল হাসান বাকি ছাত্রলীগে সেভাবে সক্রিয় না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী। পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসার জন্যই তিনি এমনটা করেছেন।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরীয়া বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছি। পূর্বে থাকলেও বর্তমানে সে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই। সে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমরা শুনেছি। ঘটনাক্রমে সেখানে আমাদের কয়েকজন সহকারী প্রক্টর ছিলেন। তারা ওই সময় শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। বিষয়টি লোক প্রশাসন বিভাগ দেখছে। তারা সমাধান করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দফতর থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাইদ চাঁদ। এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে রাবি ছাত্রলীগ। সমাবেশ থেকে বিএনপি নেতা চাঁদকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম