রসায়ন : গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো দেখে নাও
বিমান চক্রবর্তী
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৫০ পিএম
রসায়নে ১২টি অধ্যায় থাকলেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ১ থেকে ৭ এবং ১১ অধ্যায়সহ মোট ৮টি অধ্যায় তোমাদের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত। তোমাদের ৮টি প্রশ্নের মধ্যে ৫টির উত্তর দিতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অর্থাৎ যে অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি তা হলো অধ্যায়- ২ থেকে ৭ এবং ১১ অধ্যায়। কোনো শিক্ষার্থীর কাছে ১১ অধ্যায় কঠিন মনে হলে তারা ২ থেকে ৭ অধ্যায়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে পারে। যেহেতু তোমাদের ৪টি অধ্যায় কমিয়ে দিয়েছে কাজেই প্রতিটি অধ্যায়ের ওপরই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আমার কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো হচ্ছে পদার্থের গঠন (৩); পর্যায় সারণি (৪) রাসায়নিক বন্ধন (৫) মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা (৬) রাসায়নিক বিক্রিয়া (৭) এবং খনিজ সম্পদ জীবাশ্ম (১১)।
এ ৬টি অধ্যায় থেকে ৬টি প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি যা থেকে ৫টি প্রশ্ন স্বাচ্ছন্দ্যে উত্তর করা যেতে পারে। এখন অধ্যায়ভিত্তিক কিছু আলোচনা করা যাক। ২য় অধ্যায়ে জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ভালো করে পড়তে হবে। মিশ্রণের পৃথকীকরণ ধারাবাহিকভাবে লিখতে হবে। গ্রাফভিত্তিক যে প্রশ্নগুলো আছে তা X অক্ষ ও Y অক্ষ বরাবর যা থাকবে তা লিখতে হবে। ব্যাপন, নিঃসরণ, গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক, গলন ও স্ফুটনের সুপ্ত তাপ, পাতন, ঊর্ধ্বপাতন, ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন Heating ও Cooling curve ভালো করে শিখবে।
৩য় অধ্যায়ে মৌলিক কণিকাগুলো, পারমাণবিক সংখ্যা, ভর সংখ্যা, পরমাণুর মডেল, ইলেকট্রন বিন্যাস (ব্যতিক্রমসহ), আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর, আইসোটোপ সংক্রান্ত গাণিতিক সমস্যা ও তেজস্ক্রিয়া আইসোটোপ ভালো করে পড়বে।
৪র্থ অধ্যায়ে পর্যায় সারণির ইতিহাস, বৈশিষ্ট্য, আধুনিক পর্যায় সূত্র, সীমাবদ্ধতা, মূলনীতি, মৌলগুলোর অবস্থান নির্ণয়, পর্যায়বৃত্ত ধর্ম (পারমাণবিক আকার, আয়নীকরণ শক্তি, ইলেকট্রন আসক্তি, ভড়িৎ ঋণাত্মকতা) অবস্থান্তর মৌল, ক্ষার, মৃৎক্ষার, মুদ্রাধাতু, হ্যালোজেন ও নিস্ক্রিয় গ্যাস। পর্যায় সারণির সুবিধা ও একই গ্রুপে মৌলগুলোর ধর্ম প্রায় সমান- ব্যাখ্যা।
৫ম অধ্যায়ে যোজ্যতা, যোজনী, মুক্তজোড় ইলেকট্রন, যৌগমূলক, গাঠনিক সংকেত, ‘অষ্টক তত্ত্ব, দুই এর নিয়ম, ক্যাটায়ন, অ্যানায়ন। আয়নিক ও সমযোজী বন্ধন ডায়াগ্রামসহ (পেন্সিল দিয়ে আঁকবে) ব্যাখ্যা। পোলার যৌগ, তড়িৎ পরিবাহিতা বিভিন্ন যৌগের দ্রাব্যতা, গলনাঙ্ক স্ফুটনাঙ্কের ব্যাখ্যা। ধাতব বন্ধন, ধাতু বিদ্যুৎ পরিবাহী, হীরক অপরিবাহী, গ্রাফাইট পরিবাহী প্রভৃতি শিখবে।
৬ষ্ঠ অধ্যায়ে মোল, অ্যাভোগেড্রো সংখ্যা, মোলার আয়তন, মোলার ঘনমাত্রা, লিমিটিং বিক্রিয়ক কাকে বলে এবং এ সংক্রান্ত গাণিতিক সমস্যা। শতকরা সংযুক্তি স্থূল ও আণবিক সংকেত/ নির্ণয়/ পার্থক্য রাসায়নিক সমীকরণ ঘটিত এবং উৎপাদের শতকরা পরিমাণ ঘটিত গণনা। গাণিতিক সমস্যার ক্ষেত্রে যা চাওয়া হবে তার সংজ্ঞা দিয়ে শুরু করা ভালো।
৭ম অধ্যায়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া ও শ্রেণি বিভাগ, উভমুখী বিক্রিয়াকে কিভাবে একমুখী বিক্রিয়ায় রূপান্তর। Redox, Non Redox, যোজনী ও জারণ সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য, জারণ বিজারণ যুগপৎ ঘটে, প্রতিস্থাপন দহন। সব সংশ্লেষণই সংযোজন কিন্তু সব সংযোজন সংশ্লেষণ নয়, প্রশমন, অধঃক্ষেপণ, আর্দ্র বিশ্লেষণ সমানুকরণ, লোহায় মরিচা পড়া, ইলেকট্রোপ্লেটিং বিক্রিয়ার হারের ওপর ঘনমাত্রা, তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাব প্রভৃতি ঠোঁটস্থ রাখবে।
১১ অধ্যায়ে হাইড্রোকার্বন, হাইড্রোকার্বনের শ্রেণি বিভাগ, বেনজিন, ন্যাপথালিন একটি অ্যারোমেটিক যৌগ, প্যারাফিন অ্যালকাইল মূলক, কার্যকরী মূলক, সমগোত্রীয় শ্রেণি, অ্যালকেন, অ্যালকিন অ্যালকাইন, অ্যালকোহল, অ্যালডিহাইড ও জৈব অ্যাসিডের প্রস্তুতি, বিক্রিয়া পারস্পরিক রূপান্তর, ইথিন/ ইথাইন একটি অসমপৃক্ত হাইড্রোকার্বন, ইথি/ইথাইন থেকে অ্যালকোহল জৈব অ্যাসিড, ফার্সেন্টেশন, রেক্টিফায়েড স্পিরিট, মেথিলেটেড স্পিরিট, পাওয়ার অ্যালকোহল, ফরমালিন, ভিনেগার, নাইলন ৬:৬, ডেরলিন P.V.C, পলিপ্রপিন জৈব ও অজৈব যৌগের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা