সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের হুমকি প্রাথমিক শিক্ষকদের
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৪:১১ এএম
বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুধবারের পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। প্রতিবাদে তারা সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দিয়েছেন।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বুধবার বেলা ১১টায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কয়েক হাজার শিক্ষক শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হন।
কিন্তু পুলিশ আগে থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ ঘিরে রাখায় বাধা পেয়ে শিক্ষকরা সড়কে অবস্থান নেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেয়; কিছুক্ষণ পর আবার শিক্ষকরা শহীদ মিনারে ঢোকার চেষ্টা করলেও সফল হননি।
পরে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বরে অবস্থান নেন। সেখান থেকে দাবি পূরণ করার জন্য আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন তারা।
এই সময়ের মধ্যে বেতন বৈষম্যের নিরসন না হলে এবং এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা না করা হলে, আসন্ন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করা হবে বলে হুমকি দেন শিক্ষকেরা।
১৭ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হওয়ার কথা। শিক্ষক নেতারা বলছেন, তারা প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষাও বর্জন করবেন। এরপরও দাবি পূরণ না হলে তারা বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেবেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ শামসুদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, দোয়েল চত্বরে তাদের সংগঠনের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান এই কর্মসূচি ঘোষণা করে আজকের কর্মসূচি শেষ করেন। তবে এই ঘোষণার পরেও অনেক শিক্ষক ওই এলাকায় এখনো বিক্ষিপ্তভাবে রয়ে গেছেন।
শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, আগামী ১৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন না হলে, আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করবেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে যদি আমাদের দাবি পূরণ না হয় তবে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন ও সব প্রাথমিক বিদ্যালযয়ে তালা দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকেরা ১৪তম গ্রেডে ও প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকেরা ১৫তম গ্রেডে বেতন পান। আর প্রশিক্ষণ পাওয়া প্রধান শিক্ষকেরা ১১তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকেরা ১২তম গ্রেডে বেতন পান।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। কিছুদিন আগে তারা বিদ্যালয়ে কর্মবিরতিও পালন করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের ১৪টি সংগঠন এক হয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করছেন।