Logo
Logo
×

শিক্ষাঙ্গন

নিপীড়ন ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার শপথ বুয়েট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:৪৩ এএম

নিপীড়ন ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার শপথ বুয়েট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

শপথ নেয়ার আগে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

নিপীড়ন, সন্ত্রাস ও রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার শপথ নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুপুরে বুয়েট মিলনায়তনে এই গণশপথ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এক সারিতে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।

এই গণশপথের মধ্য দিয়ে আবরার হত্যার বিচার দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের মাঠের আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটল। 

শপথ নিয়ে বেলা ১১টা থেকে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে জমায়েত হন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টায় গণশপথ হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেটি দেরিতে শুরু হয়।

মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঠের আন্দোলন আজ থেকে স্থগিত করলেও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন অব্যাহত থাকছে। 

আবরার হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে যাদের নাম আসবে, তাদের সবাইকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত তারা কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না।


আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আরিফ ইবনে আলী বলেন, 'গণশপথের মধ্য দিয়ে মাঠের আন্দোলন শেষ হল৷ মাঠের আন্দোলন শেষ হলেও দাবিগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ চলবে।’

প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে ৫ অক্টোবর শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।

হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলিট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতিমধ্যে পুলিশ ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। রোববার পর্যন্ত চারজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন, অনীক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ইফতি মোশারেফ, বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে মুন্না, ছাত্রলীগের সদস্য মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ওরফে তানভীর, মোহাজিদুর রহমানকে, শামসুল আরেফিন, মনিরুজ্জামান ও আকাশ হোসেন, মিজানুর রহমান (আবরারের রুমমেট), ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা এবং হোসেন মোহাম্মদ তোহা এবং মঙ্গলবার গ্রেফতার হয়েছেন এ এস এম নাজমুস সাদাত।

এদের মধ্যে ১৩ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। আর ১৯ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

আবরার হত্যার ঘটনায় বুয়েট শিক্ষার্থীরা খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি, বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থী ছাত্ররাজনীতিতে জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দেন তিনি। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, কেবল আশ্বাস নয়, বাস্তবায়নও দেখতে চান তারা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম