বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ করা হয় ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এখাতে আগামী বাজেটে বরাদ্দ কমানো হয়েছে ৪৫০২ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট বাজেটের ১৩.২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হলেও এবার এখাতে ১১.৪ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ১০৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চলতি বাজেটে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এখাতে বরাদ্দ একটু বাড়তে পারে। তবে এবার বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য ২৯ হাজার ২৩০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৩৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।
বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও ব্যবহার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
এদিকে দেশজুড়ে গ্যাস সংকট সমাধানে জ্বালানি খাতে বড় বরাদ্দের প্রত্যাশা করেছিলেন শিল্পোদ্যোক্তা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের মতোই কম বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে খাতটি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জ্বালানি বিভাগের বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা।
বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমাদের গ্যাসের উৎপাদন ছিল দৈনিক ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি দৈনিক প্রায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট আমদানিকৃত এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে অনশোর এলাকায় তেল/গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য ৪৮টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ফলে সামুদ্রিক খনিজ ও অন্যান্য সম্পদের আহরণ এবং এর সুষ্ঠু ব্যবহারের গুরুত্ব বিবেচনায় সুনীল অর্থনীতি খাতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অফশোর মডেল প্রোডাকশন শেয়ারিং কনট্রাক্ট ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আওতায় অগভীর সমুদ্রের ৯টি ব্লক এবং গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য ‘বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড-২০২৪’ শুরু করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে বৃদ্ধি করে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার জন্য ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।