কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ চান অর্থমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৩, ১০:০২ পিএম
বিশ্বময় খাদ্য সংকট নিরসনে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, উৎপাদন ও সংরক্ষণে সমন্বয় থাকতে হবে। উৎপাদন কমে গেলে কিংবা ফসল বিনষ্ট হলে দেশ ক্ষতির মুখে পড়বে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি পদক্ষেপের ফলে গত ১৪ বছরে ৬৯০টি উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল উদ্ভাবন হয়েছে। ধান, ভুট্টা, আলু, সবজি ও ফলসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকার সব ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সার, বীজ, ও অন্যান্য উপকরণ এবং সেচ সুবিধা প্রদান করছে। সারে মোটা অঙ্কের ভর্তুকি দিচ্ছে। সেচকাজে ব্যবহৃত বিদ্যুতে ২০ শতাংশ রেয়াত দেওয়া হচ্ছে।
সুতরাং উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল আবাদ বেড়েছে এবং এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষিকাজে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। হাওড় ও উপকূলীয় এলাকায় ৭০ শতাংশ এবং অন্যান্য এলাকায় ৫০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ফলে চারা তৈরি, রোপণ ও ফসল কাটা সহজ হচ্ছে। সরকার বোরো মৌসুমে দীর্ঘ জীবনকালীন ধানের পরিবর্তে স্বল্প জীবনকালীন ধান আবাদের উদ্যোগ নিয়েছে।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও উন্নত প্যাকেজিং ব্যবস্থা করে ফসল বিনষ্ট কমিয়ে এনেছে। সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে আধুনিক সংরক্ষণাগার, প্যাকেজিং হাউজ, কুলচেইন অন্যান্য সুবিধা স্থাপন করা হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের ৭০টি দেশে শাকসবজি, ফল রপ্তানি হচ্ছে। কৃষিপণ্য রপ্তানি করে সরকার বছরে ১০০ কোটি ডলার আয় করছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার লবণাক্ততাসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতা সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। রেডিও, বিভিন্ন মোবাইল ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কৃষকের দোরগোড়ায় কৃষিতথ্য সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। নানা পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ পেঁয়াজ উৎপাদনে আজ স্বয়ংসম্পন্ন। ভোজ্য তেল আমদানি হ্রাস পেয়েছে। আলু রপ্তানি বেড়েছে। বিশ্বে চাল উৎপাদনে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম, মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৭ লাখ মেট্রিকটন খাদ্যসশ্য সংরক্ষণ উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় ৩০ টাকা দরে ওএমএস এবং ১৫ টাকা করে দেশব্যাপী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল বিক্রি হচ্ছে। ফ্যামিলি কার্ডে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়া হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে বিপণন কর্মসূচির আওতায় এক কোটি পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে প্রায় পাঁচ কোটি পরিবার সরাসরি উপকৃত হচ্ছে।