অমর একুশে বইমেলা ২০২৫
পাঠক কম বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম

ছবি: যুগান্তর
একটা সময় ছিল যখন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেই মুখরিত থাকত পুরো বইমেলা। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা সম্প্রসারণের পর থেকে মূল প্রকাশনা সংস্থাগুলো বইয়ের পসরা মূলত সেখানেই সাজাচ্ছে। আর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকছে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তাদের স্টল নিয়ে বসেছে। সেখানেও আছে গুরুত্বপূর্ণ সব বই আর প্রকাশনা। তবে বরাবরের মতো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের মেলার অংশে তেমন একটা ভিড় নেই।
রোববার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সব সরকারি-বেসরকারি
প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব প্রকাশনায় বইগুলোর পসরা সাজিয়ে বসেছে। সমবায় অধিদপ্তর, বাংলাদেশ
মহিলা পরিষদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, প্রকৃতি ও জীবন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর,
বাংলাদেশ পরমাণু কমিশন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান
বু্যরোর স্টল আছে সেখানে।
আরও আছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক
সংস্থা (জাসাস), আর্কাইভ ও গণগন্থাগার অধিদপ্তর, জাতীয় আইন সহায়তা প্রদান কেন্দ্র,
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক
সোসাইটি, সম্পর্শ ব্রেইল, এসএমই ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, জিয়া
পরিষদ, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, বিজ্ঞানবাক্স, জুলাই-বিপ্লব পরিষদ, জিয়া স্মৃতি পাঠাগার,
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, উন্মাদ, কর্নেল তাহের সংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন,
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)সহ
বাংলা একাডেমির প্যাভিলিয়ন ও স্টল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্টলের দিকে এগিয়ে যেতেই দেখা গেল, বাংলা একাডেমিতে
থাকা স্টলগুলোর মধ্যে এখানেই মানুষের আগ্রহ বেশি। জুলাই গণ-অভু্যত্থানের অনেক বইয়ের পসরা
সাজানো হয়েছে এখানে। আছে গণ-অভু্যত্থান নিয়ে টি-শার্টও। অনেকেই সেখান থেকে পছন্দের
বই ও টি-শার্ট কিনে নিচ্ছেন। ইসলামিক ফাইন্ডেশনের স্টলে অনেককেই ইসলামিক নানা বইয়ের
বিষয়ে খোঁজখবর খোঁজখবর নিচ্ছেন। শিশু একাডেমির স্টলে শিশুদের জন্য মানসম্মত বেশ অনেক
বই থাকলেও এখানে শিশুদের আনাগোনা তেমন একটা নেই বললেই চলে।
মেলায় এসেছে কবি আবদুল হাই শিকদারের আরেকটি নতুন কবিতার বই ‘ফকিন্নী জমিলা সমীপে
প্রেমোত্থাপনের বয়ান’। নাগরী প্রকাশনের স্টলে পাওয়া যাবে বইটি। বইমেলায় এসেছে তানভীর
রানা মুস্তাফিজের ছোটগল্পের বই ‘শুকনো পাতায় বৃষ্টির গান'। প্রকাশ করেছে অনন্যা প্রকাশনী।
বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
আলোচনা অনুষ্ঠান : রোববার বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘মাকিদ হায়দারের কবিতা' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ
উপস্থাপন করেন চঞ্চল আশরাফ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আসিফ হায়দার এবং শাওন্তী হায়দার।
সভাপতিত্ব করেন আতাহার খান।
প্রাবন্ধিক বলেন, কবি হিসাবে মাকিদ হায়দারের আত্মপ্রকাশ গত শতাব্দীর ষাটের
দশকে। তার নিকট-অতীত ও সমকালীন কবিদের রচনায় রোমান্টিক আবেগ প্রকাশের যে ধারা গড়ে
উঠেছিল, তার অনুগামী না হয়ে নিজস্ব পৃথক একটি ধারা গড়ে তোলার চষ্টোয় তিনি ব্যাপৃত
থেকেছেন। তিনি এমন এক বর্ণনারীতির চর্চা করেছেন যা ষাটের দশকের কবিতায় খুব কমই দেখা
যায়।
লেখক বলছি মঞ্চে এদিন নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন আবু সাঈদ খান এবং পাভেল পার্থ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সাহেদ মন্তাজ, শাহ কামাল
সবুজ এবং আফরোজা পারভীন। এদিন ছিল ফয়জুল আলম পাপ্পুর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক
সংগঠন' এবং ঢালী মোহাম্মদ দেলোয়ারের পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘বুলবুল একাডেমি অব ফাইন
আর্টস (বাফা)'-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সুমন মজুমদার, শারমিন সাথী ইসলাম,
সুনীল সূত্রধর, ড. পরিতোষ মন্ডল, ফারহানা আক্তার শার্লি এবং শাহনাজ নাসরীন ইলা।
সোমবার বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ : মনিরুজ্জামান'
শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মাশরুর ইমতিয়াজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ
করবেন সালমা নাসরীন এবং মামুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক মনসুর মুসা।