গত সাত বছর ধরে সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা ও জাহির ইকবাল। গত ২৩ জুন এ তারকা জুটি আইনি মোতাবেক বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। এর পর রিসেপশনের আয়োজন হয়। এ তারকা জুটির বিয়েতে ছিল না কোনো ধর্মীয় আচার। বিয়ের পর সোনাক্ষী ধর্ম পরিবর্তন করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন জাহির ইকবালের বাবা। 

বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে সুখেই আছেন বলে জানান সোনাক্ষী সিনহা। বিয়ের পর তেমন কোনো ছুটি নেননি অভিনেত্রী। বরং নিজের আসন্ন ছবির প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। যদিও স্ত্রীকে এক মুহূর্ত হাতছাড়া করেন না জাহির ইকবাল। সারাক্ষণ সোনাক্ষীর সঙ্গেই থাকেন তিনি। 

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বাবা আর স্বামীর মধ্যে বিশেষ মিলের কথা টেনে এনে সোনাক্ষী সিনহা জানালেন— অনেক দিন ধরেই জাহিরকে চিনতেন শত্রুঘ্ন সিনহা। তারা একে অপরের সঙ্গে দেখাও করেন। বাবা যে জাহিরকে পছন্দ করতেন তা-ও স্পষ্ট জানিয়েছেন সোনাক্ষী। তিনি বলেন, বাবাকে যখন জানিয়েছিলাম, তখন বাবা বলেছিলেন—যব মিঞা বিবি রাজি, তো কেয়া করেগা কাজি। বাবা জাহিরকে চিনতেন, পছন্দও করতেন।

শুধু তা-ই নয়, জাহির আর শত্রুঘ্নের মধ্যে বিস্তর মিল রয়েছে বলেও জানান সোনাক্ষী। তিনি বলেন, জানেন তো— আমার বাবার জন্মদিন ৯ ডিসেম্বর, আর জাহিরের ১০ ডিসেম্বর। ফলে চরিত্রগতভাবেও ওদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে।

সোনাক্ষী আরও বলেন, প্রেমের কথা তিনি প্রথম মাকেই বলেছিলেন। মা পুনমকেও ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন বাবা শত্রুঘ্ন সিনহা। অভিনেত্রী বলেন, আমার মাও জাহিরকে চিনতেন। আমার মা-বাবা নিজেরা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। তারা জানেন ভালোবাসার অর্থ।

উল্লেখ্য, সেই সময় সোনাক্ষীর ভিন্নধর্মে বিয়ে নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে ছিল বেশ হইচই। কেউ কেউ এ বিয়েকে ‘লাভ জিহাদ’-এর তকমা দেন। তবে যাকে নিয়ে এত কথা, সেই সোনাক্ষী বলেছিলেন— তার ও জাহিরের বিয়ে নিয়ে হাজার ধরনের সমালোচনা হলেও ধর্ম তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। 

সোনাক্ষী সিনহা ও জাহির ইকবালের বিয়ের দিন রিসেপশনে দেখা যায়নি অভিনেত্রীর দুই ভাই লব সিনহা ও কুশ সিনহাকে। বিয়েতে ছিলেন শত্রুঘ্ন সিন্হাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। এ নিয়ে নেটিজেনদের মাঝে ছিল মিশ্র সমালোচনা। কিন্তু বিয়ের পর মুখ খোলেন লব সিনহা। সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করে সোনাক্ষী ও জাহিরের বিয়ে নিয়ে লব বলেন, এত সমালোচনা সত্ত্বেও পরিবারের প্রতি তার ভালোবাসা কোনোভাবেই কমবে না। পরিবারই তার কাছে প্রাথমিক বিষয়। 

সেই সময় অভিনেত্রীর শাশুড়ি বলেছিলেন, সোনাক্ষী আসলে খাঁটি সোনা। জাহিরের বাবা বউমা সম্পর্কে বলেন, সোনাক্ষীর মন সোনার মতো। জাহিরের জন্য সোনাক্ষীর থেকে ভালো কোনো মেয়ে হতেই পারত না। ওদের দুজনকে একসঙ্গে সুখী দেখে আমরাও খুশি। ঈশ্বর ওদের মঙ্গল করুন। 

বিয়েতে ছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা। বাবা হিসেবে মেয়ের বিয়েতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। সিনহা পরিবারের নয়নমণি সোনাক্ষী সিনহা। মা-বাবার চোখের মধ্যমণি। তাই বিয়ের দিনে বাবা শত্রুঘ্ন সিনহা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কন্যার জীবনের নতুন ইনিংসে যেমন তিনি উচ্ছ্বসিত, তেমনি চাপাকান্না বুকে কষ্ট। 

জাহির ইকবালের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, ‘গুড বয়’ জাহির। খুব ভালো ছেলে। আমার মেয়েকে ভালো রাখবে ও…।‘ তিনি আরও বলেন, ’৪৪ বছর আগে আমি একজন সফল, সুন্দরী ও ভীষণ ট্যালেন্টেড একটি মেয়েকে নিজের পছন্দে বিয়ে করেছিলাম। সে হচ্ছে পুনম সিনহা। আজ আমার মেয়ে সোনাক্ষীর পালা। ওর পছন্দই আমাদের পছন্দ। ওর নিজের জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে আমি পূর্ণ সমর্থন করি।‘