Logo
Logo
×

বিএনপি

রাষ্ট্রে আইনের শাসন না থাকলে মানুষের নিরাপত্তা থাকে না: তারেক রহমান

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৫ পিএম

রাষ্ট্রে আইনের শাসন না থাকলে মানুষের নিরাপত্তা থাকে না: তারেক রহমান
রাষ্ট্রে আইনের শাসন না থাকলে সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু কেউই নিরাপদ নন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একমাত্র আইনের শাসন সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে বলে তিনি উল্লে­খ করেন। 

শুক্রবার বিকালে নগরীর জেএম সেন হলে শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তারেক রহমান বলেন, আমাদের সবারই জেনে রাখা প্রয়োজন রাষ্ট্র এবং সমাজে নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত করতে কোনো দলীয় পরিচয়ে আবদ্ধ থাকা জরুরি নয়। পলাতক যে স্বৈরাচারের শাসনামল ছিল সে আমলে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর যাদের আয়নাঘরের নির্জন জায়গায় মৃত্যু আতঙ্কে কাটাতে হয়েছে, সবাই কিন্তু সংখ্যাগুরু সদস্য। কিন্তু এ পরিচয় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

সনাতনীদের যাতে কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিতাড়িত স্বৈরাচারী সরকারের সময় গত দুই দশকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বা তাদের স্থাপনা ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনাগুলো যদি পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখব হাতেগোনা দু-একটি ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশের সংখ্যালঘুকেন্দ্রিক হামলার ঘটনা কোনো ধর্মীয় কারণে হয়নি। প্রত্যেকটি ঘটনা নিবিড়ভাবে তদন্ত করলে স্পষ্ট হয়ে যাবে। এসব হামলা ছিল অবৈধ, লোভ-লাভের জন্য দুর্বলের ওপর সবলের হামলা বা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সেজন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে আর কেউ যাতে নিজেদের হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে। সে ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছর বাংলাদেশে কংসের মতো এক নৃশংস স্বৈরাচার জনগণের ওপর জাগ্রত পাথরের মতো চেপে বসেছিল। দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে গণতন্ত্রকামী বীর জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে পালায় সেই কংসরূপী নৃশংস গণহত্যাকারী স্বৈরাচার। স্বৈরাচার পালালেও গণতন্ত্র কিন্তু এখনো শঙ্কামুক্ত নয়।

তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ক্রমাগত অব্যাহত রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের দোসর নানা কৌশলে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টায় প্রতিনিয়ত লিপ্ত। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ সংসদ ও সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত না গঠিত হবে, ততদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়।
 
তিনি বলেন, আপনারা আমাকে যে আমন্ত্রণপত্র দিয়েছেন, সেখানে লেখা ছিল, গত ১৭ বছর ধরে সংগঠনটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারণ সনাতনীরা সেটা এখন বুঝতে পেরেছে। নতুনভাবে এ সংগঠনকে পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই যে রাজনৈতিকভাবে আপনাদের ব্যবহার করা হয়েছে এ গভীর সত্যটি আপনারা যদি বুঝতে পারেন, তাহলে অবশ্যই এটা আপনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা একটি ক্রসরুটে দাঁড়িয়ে আছি। এটা আমাদের অতিক্রম করতে হবে। এটা অতিক্রম কোনো একটি গোষ্ঠী বা ধর্ম দ্বারা হবে না। এটার অতিক্রম আমাদের সবাইকে মিলে করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা পালানোর পরে দেশে যখন চরম বিভক্তি, অস্থিতিশীলতা ও আনন্দ একসঙ্গে বিরাজ করছিল, তখন সহনশীলতার প্রশ্ন আসছিল, পরাজিত শক্তির ওপর আক্রমণের কথা আসছিল। তখন তারেক রহমান সাহেবের এক বক্তব্যে দেশের মানুষ একটি দিক পেয়েছিল। এক হয়েছিল। পরিস্থিতি তারপর ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হতে শুরু করে।

শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব আরকে দাশ রূপু প্রমুখ।
Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম