Logo
Logo
×

বিএনপি

শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় যা বললেন ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৯ এএম

শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় যা বললেন ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক

ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে মধ্যরাতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকা। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সহায়তায় ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এমন উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘ঢাকা শহরের সাতটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুদীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর দীর্ঘ সুনাম ও স্বতন্ত্র ঐতিহ্য থাকার পরেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদলেহনকারী সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার আরেক সহযোগী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন অর রশিদের ব্যক্তিগত রেষারেষির পরিপ্রেক্ষিতে লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ও সুন্দর ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলে এই কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এটি ছিল একটি অবিবেচনাপ্রসূত চরম হঠকারি পদক্ষেপ।’

ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক লেখেন, ‘আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার দায়ভার সম্পূর্ণরূপে শেখ হাসিনা ও তার দোসর আরেফিন সিদ্দিকর। উল্লেখ্য, ডক্টর হারুন অর রশিদ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্রদের ওপর আরও বেশি গুলি করে হত্যা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনাকে। তারাই এই অধিভুক্ত কলেজের সমস্যার মূল কুশীলব।’

তিনি লেখেন, ‘বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে অতিদ্রুত সমস্যার সমাধান করতে হবে। সহিংসতা সমাধানের পথ রুদ্ধ করবে। সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরকে শান্তি বজায় রেখে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’  

ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক লেখেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা রেজিম এই সমস্যার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তারাই এই সহিংসতা উসকে দিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। আপনারা ফ্যাসিস্টদেরকে সেই সুযোগ দিবেন না। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানসহ সব গণতান্ত্রিক সংগ্রামে আজকের বিবাদমান প্রতিষ্ঠানগুলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। আজ আপনারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত সৃষ্টি করে ফ্যাসিস্টদেরকে কোনো সুযোগ দিবেন না। সব ধরনের উসকানি এড়িয়ে চলুন।’ 

তিনি আরও লেখেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি, ফ্যাসিস্ট হাসিনার তৈরি করা এই সংকট দ্রুত নিরসন করুন। সব পক্ষের মতামত শুনে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বাস্তবসম্মত একটি সমাধান বের করুন।’

প্রসঙ্গত, রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করায় সায়েন্স ল্যাব এলাকা, নীলক্ষেত মোড় ও এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন ঘরে ফেরা মানুষ।

জানা গেছে, সাত কলেজের ভর্তির আসন কমানোসহ ৫ দফা দাবি নিয়ে বিকালে শতাধিক শিক্ষার্থী আলোচনা করতে ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের কার্যালয়ের সামনে যান। অধ্যাপক মামুন আহমেদ দুই-তিনজন প্রতিনিধিকে তার কার্যালয়ে এসে কথা বলতে অনুরোধ করেন। তবে সে অনুরোধ উপেক্ষা করে সবাই কার্যালয়ের ভেতরে ঢোকেন। এসময় ‘মব’ সৃষ্টি অধ্যাপক মামুন তাদের সঙ্গে আর কথা বলেননি। পরে এর প্রতিক্রিয়ায় সেখান থেকে তারা বেরিয়ে অবরোধ শুরু করেন।

ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার তারিক লতিফ বলেন, সাত কলেজে ভর্তির আসন কমানোসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসিসহ ইউনিটের দায়িত্বরত শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করেন। শিক্ষকেরা নাকি তাদের কথার কোনো গুরুত্ব দেননি। এরই প্রতিবাদে তারা সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে সড়ক অবরোধ করেছেন। 

তিনি বলেন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়েসহ আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে; শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না; শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে; নেগেটিভ মার্ক যুক্ত করতে হবে; সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে, মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাবি ব্যতীত নতুন অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফির টাকা জমা রাখতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম