Logo
Logo
×

বিএনপি

ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পান চেষ্টা করা হবে: মির্জা ফখরুল

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৪ পিএম

ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পান চেষ্টা করা হবে: মির্জা ফখরুল

ঋণখেলাপিরা যাতে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না পান, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পান, সে বিষয়ে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন তারা। 

শনিবার ‘শ্বেতপত্র এবং অতঃপর : অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও বাজেট’ শীর্ষক দিনব্যাপী সিম্পোজিয়ামের শেষ পর্বে একথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি-২০২৪।

সিম্পোজিয়ামে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঞ্চালক ছিলেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

অনুষ্ঠানে প্রথমে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এরপর মির্জা ফখরুল বক্তব্য দেন। পরে তিনি দর্শক সারি থেকে আসা বেশকিছু প্রশ্নের জবাব দেন।

এর মধ্যে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে রেহমান সোবহান জানতে চান, ঋণখেলাপিরা নির্বাচনের আগমুহূর্তে ৫ শতাংশ পরিশোধ করে ভোটে অংশ নেন। বিএনপি এ বিষয়ে কী করবে। জবাবে মির্জা ফখরুল ঋণখেলাপিরা যাতে ভোটে অংশ নিতে না পারেন, সে বিষয়ে চেষ্টা চালাবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, ৬ মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান করে ফেলা অসম্ভব। এজন্য নির্বাচনের ঘোষণাটা তাড়াতাড়ি দরকার। নির্বাচনের মধ্য দিয়েই জনগণের কাছে যাওয়া সম্ভব। তাদের আকাক্সক্ষা পূরণ করা সম্ভব। বিগত ১৬ বছর দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের চেষ্টা হয়নি। আবার চেষ্টাটা চালু করতে হবে।

৬ মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যকে অন্তর্র্বর্তী সরকারের মেয়াদের দিকে ইঙ্গিত হিসাবে মনে করেন রেহমান সোবহান। তিনি মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে বলেন, ৬ মাসের মধ্যে অন্তর্র্বর্তী সরকারের মেয়াদ শেষ করার দাবি তাড়াহুড়া হয় কিনা? জবাবে মির্জা ফখরুল হাসতে হাসতে বলেন, ‘এটা আমাদের দলীয় কৌশল (স্ট্র্যাটেজি)।’

অর্থ পাচারকারীদের আবার নির্বাচনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনার বিষয়টি প্রশ্নে উঠে এসেছে। জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সন্দেহ একেবারে অমূলক নয়। তারা যাতে নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিষয়টি বহুবার পরিষ্কার করেছি। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন দেশের জনগণ। আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেব না।

বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের জন্য কেন এত চাপ দিচ্ছে এ বিষয়ে দর্শক সারি থেকে প্রশ্ন করেন একজন ছাত্র প্রতিনিধি। জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা বিশ্বাস করেন, সংস্কারসহ সব সমস্যার সমাধান নির্বাচিত সরকারই করতে পারে।

সংস্কার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা কিন্তু সংস্কারের বিষয়ে ২ বছর আগেই বলেছি। জনগণের সামনে তুলে ধরেছি। রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফা দিয়েছি। আমরা বিষয়টাকে ভাবি দুইভাবে। এটা হচ্ছে অর্থনৈতিক সংস্কার ও রাজনৈতিক সংস্কার। আমরা রাজনৈতিক সংস্কারের ওপর গুরুত্বটা বেশি দিতে চাই। অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও গত ৫০ বছরের যে অভিজ্ঞতা আছে সেখানে থেকে এবং এই যে আন্দোলনটা গণঅভ্যুত্থান এ থেকেও মানুষের একটা তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্মেছে। সেটা হচ্ছে মানুষ একটা পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তনটা হচ্ছে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে দেখতে চাওয়া। রাজনৈতিক সরকার ছাড়া এটি বেশ কঠিন। সেজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী দুবারের বেশি হতে পারবেন না, রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক চর্চা অনেক বেশি বৃদ্ধির কথা বলেছি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পার্লামেন্টে দুটি কক্ষ করতে চাই। দ্বিতীয় কক্ষে আমাদের ইচ্ছা যারা নির্বাচন করেন না, কিন্তু দেশকে কিছু দিতে পারেন তাদের আপার হাউজে আনার কথা বলেছি। আমরা বৈষম্য দূর করার জন্য চেষ্টা করব। এই ১৫ বছরে যে জঞ্জাল তৈরি হয়েছে, তা এককভাবে আমরা দূর করতে পারব না। এজন্য আমরা জাতীয় সরকারের কথা বলেছি। যারা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের সবাইকে নিয়ে একটা সরকার গঠনের কথা বলেছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম