দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়লে এই সরকার সফল হবে: মোশাররফ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ পিএম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতিদ্রুত একটি নির্বাচনি রোডম্যাপ দেবে- এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।তিনি বলেছেন, দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়লে জনগণ এই সরকারকে সফল মনে করবে।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ড. মোশাররফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মতবিনিময় ও আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো জয়গায় ষড়যন্ত্র চলছে। কেউ কেউ বলছেন- সংস্কার শেষ করে তারপর এই দেশে নির্বাচন দেবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই সরকার অতিদ্রুত রোডম্যাপ দেবে। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে- ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা এবং ভোটের একটা সময় নির্ধারণ করা।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘সেজন্য আমরা বলছি- নির্বাচন কমিশনকে অতিদ্রুত একটি নির্বাচনি রোডম্যাপ দিতে হবে। তাহলে জনগণ এই সরকারের প্রতি আশস্ত হবে। সেই সঙ্গে আজকের যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তারা যদি সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে হয়, তাহলে জনগণকে দেওয়া তাদের যে প্রতিশ্রুতি ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ যাকে চায়, স্বাধীনভাবে তাকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। তাহলেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হবে। আমরা এই সরকারের সফলতা কামনা করি। কেননা যদি তারা ব্যর্থ হয়, যদি সঠিকভাবে নির্বাচন না হয়, তাহলে বাংলাদেশে আরও অনেক দুর্দশা অপেক্ষা করছে।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত ১৬ বছর যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় ছিল তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি, দুর্নীতি ও লুটপাট করে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। তাদেরকে এই দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিতারিত করেছে। আমরা গত ১৬ বছর যে আন্দোলন করছি সেটি জুলাই-আগস্টে চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে অন্তর্বর্তীকালীন ও নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠিত।এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জনসম্মুখে ঘোষণা করেছেন যে, বিগত সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সব সেক্টরে দুর্নীতি ও দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সেজন্য সংস্কার প্রয়োজন। আমরা (বিএনপি) বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বড় দল এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছি। আমরা এও বলেছি, যেকোনো সংস্কার একটি সরকারের পক্ষে সম্পূর্ণভাবে সমাধান করা সম্ভব না। এই সরকারের পক্ষে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এই সংস্কারে চলতে হলে ভবিষ্যতে যারা সরকারে আসবে তারা বাকি অংশ সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলেও এখনো জনগণ কোনো প্রতিফলন দেখছে না। দুর্নীতিবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বাস্তব পদক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয়ে এই সরকার এখনো সফল হতে পারেনি। আমাদের আহ্বান থাকবে যতদ্রুত সম্ভব জনগণের প্রত্যাশিত একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে তারা ক্ষমতা ছাড়বে। তাহলে জনগণ এই সরকারকে সফল মনে করবে।’
দাউদকান্দি, তিতাস, মেঘনা ও হোমনা উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের সহায়তার আয়োজন করে ‘যুব কল্যাণ কর্মসূচি ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি’। এ সময় ৫ শহিদ পরিবার ও আহতদের মধ্যে নগদ অর্থসহ সনদ এবং ক্রেস্ট তুলে দেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
ডা. মো. শহিদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও মো. এনামুল হকের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা হাজী আবুল হাসেম, শাহাদাত হোসেন সরকার, জালাল আহমদে, মিয়া মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এমএ লফিত ভূইয়া, পরিবহণ শ্রমিক নেতা সাইফুল আলম ভূইয়া, বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন আহমেদ, নুর মোহাম্মদ সেলিম সরকার, ওসমান গনি ভুইয়া, পিটার চৌধুরী, এমএ সাত্তার, ইয়াহিয়া খান, যুবদল নেতা শাহাবুদ্দিন ভূইয়া ও ডা. এমএ বাশার সরকার।