শোকজের জবাবে যা বললেন বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ পিএম
দল থেকে করা কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশের জবাব দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবরে লিখিত জবাব দেন তিনি।
লিখিত জবাবে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, ‘গত ৫ নভেম্বর ইস্যুকৃত আপনার শোকজ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমি পেয়েছি। বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকা সত্ত্বেও উত্তর দিয়ে বাধিত করছি। কথিত আবেদনকারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত নোটিশে আমি, আমার পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ব্যথিত।’
গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের রাউজানে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলাসহ নানান অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে শোকজ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।এতে বলা হয়, এলাকায় দলমত নির্বিশেষে ধনী ব্যবসায়ীর তালিকা করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায়, ওমান বসবাসরত সিআইপি ব্যবসায়ী ইয়াসিনের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা চাঁদা দাবি, চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ইয়াসিনের রাউজানের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, সিআইপি ব্যবসায়ী মো. ফোরকানের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ফোরকানকে নির্মম শারীরিক নির্যাতন, অনুগত সন্ত্রাসীরা দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থানরত রাউজানের ব্যবসায়ীদের ওপর ঢালাও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকায় আতঙ্কের জনপদে পরিণত করার অভিযোগ রয়েছে।তিন দিনের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন কাদেরকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই শোকজের লিখিত জবাব দিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।তিনি বলেন, ‘অভিযোগে উল্লিখিত বিষয়াদি আমি ও আমার পরিবারকে জনগণের সামনে হেয়প্রতিপন্ন করার একটি হীন অপকৌশল বলে মনে করি। অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিগত ১৭ বছর আওয়ামী রোষানলের পরেও দলের হাল ছাড়িনি। সন্ত্রাসীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দলের সব কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে মামলা-হামলার শিকার ও শহিদ নেতাকর্মীদের দাফন-কাফন সম্পন্নসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পাশে ছিলাম।’
নিজের পরিবারের ওপর বয়ে যাওয়া নির্যাতন প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির এই নেতা শোকজের জবাবে বলেন, ‘সর্বজনস্বীকৃত যে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে জিয়া পরিবারের পরে আমার পরিবারই সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরপরেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে হৃদয়ে ধারণ করে আছি। পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসররা আমাকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার চালানোকে তাদের শেষ অস্ত্র মনে করছি। আমি আপনার মাধ্যমে দলের সব নেতাকর্মীকে আহ্বান করব- যেন এ ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সদা সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ থাকে।’
তিনি বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) হেয়প্রতিপন্ন কিংবা প্রশ্নবিদ্ধ করা কিংবা দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কে বা কারা নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য দলের হাইকমান্ডকে আমি কিংবা আমার পরিবারের বিষয়ে ভুল তথ্য প্রদান করেছে। আমি সম্পূর্ণভাবে জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল।’