‘বাংলাদেশে অতি ধনীর পরিমাণ চীনের চেয়ে বেশি’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৪, ০৯:৪১ পিএম
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘দেশের অর্থনীতি তিনটি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। কৃষি, পোশাক এবং প্রবাসী আয়। তারাই অর্থনীতির প্রধান উৎস। কিন্তু এই বাজেটে কৃষক শ্রমিক এবং প্রবাসীদের জন্য কিছু নেই। স্বাস্থ্য, শিল্প, খাদ্য সব ক্ষেত্রে বৈষম্য বাড়ছে। ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। রিপোর্টে দেখা গেছে বাংলাদেশে অতি ধনীর পরিমাণ চীনের চেয়ে বেশি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘নৈতিকতাহীন অর্থনীতির সালতামামি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
‘দেশের জনগণের প্রতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই’ বলে মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বর্তমান সরকারের। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। জনগণের ভোট তাদের প্রয়োজন নেই। এজন্য হাতে গোনা অল্প কিছু মানুষ সরকারের সুবিধাভোগী। এই সরকারের শক্তি ওইসব সুবিধাভোগীরা। তারাই সরকার।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকারের সাবেক সেনাপ্রধান, পুলিশপ্রধান এবং জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘কৃষক, শ্রমিক, উৎপাদক, ভোক্তা কারও এই সরকার না। সংখ্যাগরিষ্ঠকে এই সরকার সন্তুষ্ট করার কোনো প্রয়োজন মনে করে না। কারণ তাদের ভোটের কোনো দরকার নেই।’
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন ছয় মাসের মধ্যে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে আনবেন। কিন্তু এই বাজেটের মধ্য দিয়ে জিনিসপত্রের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের রিজার্ভ সর্বশেষ জানামতে ১২ বিলিয়নের নিচে। এর মধ্যে সরকার আমদানির ওপর নানা নিষেধ জারি করেছে। করলেই বা কী? কয়েক দিন পর আর আমদানির অবস্থাই থাকবে না। এর মধ্যে ব্যাংকগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, সরকারের অলিগার্করা লুটপাটে ব্যস্ত।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘পুরো অর্থনীতি একটা দুর্বৃত্ত, লুটেরা, মাফিয়ানির্ভর। এই বাজেট দেশকে আরও গভীর বিপদের দিকে নিয়ে যাবে। এতে মানুষের উদ্বেগ কমানোর কোনো উদ্যোগ নেই।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকিব গণফোরাম একাংশের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের নুরুল হক নুর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুন চৌধুরী প্রমুখ।