সরকারের ‘লুটপাটে’ দেশে দুর্ভিক্ষ সম্প্রসারিত হচ্ছে: রিজভী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম
‘সরকারের লুটপাটের অর্থনীতির কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘দুই-একদিন পর উদযাপিত হবে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু ডামি নির্বাচনের বাকশাল টু সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনে পড়ে রমজানেও নিদারুণ কষ্টে জীবনযাপন করছে সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংকট তো আছেই।’
তিনি বলেন, ‘বাকস্বাধীনতা প্রয়োগের জন্য অনেক মানুষকে জুলুম ভোগ করতে হচ্ছে। সভা-সমাবেশ মিছিল করার অধিকার আওয়ামী লীগ এখন এককভাবে ভোগ করছে। নির্বাচনি ব্যবস্থাকে এরা কলুষিত করে ক্ষমতা দখলে রেখেছে। আওয়ামী সন্ত্রাস মাত্রাছাড়া হয়ে উঠেছে। জনগণের ওপর প্রভুত্বকামী জুলুমবাজ সরকার পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত দেশব্যাপী হিংসার মন্ত্রণাদাতা ও শান্তির শক্র। এরা গণতন্ত্রের মূল নীতিকে সমাধিস্থ করে এক সর্বগ্রাসী অত্যাচারী রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মনে ঈদের কোনো আনন্দ নেই। বিশেষ করে মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এবারের ঈদ সবচেয়ে নিরানন্দ ও বেদনাদায়ক।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য হচ্ছে ক্ষমতায় এসেই গণতন্ত্রের লাশ ফেলে দেওয়া। অত্যাচার, লুটতরাজ সর্বক্ষেত্রেই বিদ্যমান। রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে দুঃশাসন চালিয়ে আসছে। জবরদস্তিমূলক ক্ষমতা ধরে রেখে গত প্রায় ১৬ বছরে ক্রমবর্ধমান স্বৈরশাসনের নানামুখী ফরম্যাটে ৫০ লাখের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করেছে। গণতন্ত্র ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলনের অপরাধে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে এখনো কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন ভয়ঙ্কর আতঙ্কের দেশ। ডামি নির্বাচনের পর অনেককে জামিন দিলেও আবারো নতুন নতুন মামলায় কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার মানুষকে গুম, খুন, গুপ্তহত্যার শিকার করা হয়েছে। ছয় বছরের শিশু থেকে মায়ের পেটের বাচ্চাকেও গুলি করা হয়েছে। কবরে শায়িত ব্যক্তি, কোলের বাচ্চা, বিদেশে অবস্থানকারী মানুষ, কারাবন্দি লোককে নাশকতা, ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ইত্যাদি গায়েবি মামলায় জড়িত করার অগণিত উদাহরণ রয়েছে। তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কেউই এই গায়েবি মামলা ও সরকারি নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে রেহাই পায়নি। দেশ যেন এখন কাঁটাতারের বেড়াঘেরা এক অবরুদ্ধ জনপদ।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘সরকারের সাজানো মিথ্যা মামলায় জর্জরিত বিএনপির তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় সব নেতাকর্মী। কারো কারো বিরুদ্ধে ৪শ থেকে ৫শ মামলাও রয়েছে। একদিকে মামলার চাপ আরেকদিকে ব্যবসা বাণিজ্যসহ সব হারিয়ে অনেকটা নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরা। এছাড়াও এখনো যারা কারাবন্দি রয়েছেন এমন নেতাকর্মীর সংখ্যাও কম নয়। কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে এবারো ঈদ করতে হচ্ছে দলটির অজস্র নেতাকর্মীকে। অবৈধ ও ডামি নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে রাজনৈতিক মামলায় বন্দি এসব নেতাকর্মী।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. শাহিদা রফিক, তাহসিনা রুশদির লুনা, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ।