কারাগারে তিন মাস ফখরুল আব্বাস-খসরুর
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে রমনা থানার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে তাদের জামিন বিষয়ে আংশিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
২৮শে অক্টোবর মহাসমাবেশে সংঘর্ষের পরদিনই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে দায়ের হয় ১১টি মামলা। যার ১০টিতেই জামিন পেয়েছেন তিনি। একমাত্র প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনার মামলাটিতে তার জামিন বারবার আটকে দেয়া হচ্ছে।
যদিও একই মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীসহ ১৫ জন নেতা। কিন্তু বিএনপি মহাসচিবের জামিন চারবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। একই মামলায় জামিন পাচ্ছেন না দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দুই ডজন সিনিয়র নেতা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে আছেন দীর্ঘ ১০০ দিন ধরে। জামিন প্রত্যাখ্যানের নেপথ্যে দুরভিসন্ধি দেখছেন আইনজীবীরা।
তারা বলছেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চললে বিএনপি’র সিনিয়র নেতারা জামিন পাওয়ার হকদার। কারণ জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করা হয় সবগুলো ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে তারা পড়েন।
গত ২৬ ডিসেম্বর কারাগারেই কেটেছে মির্জা ফখরুলের ৭৮তম জন্মদিন। ওইদিন স্ত্রী রাহাত আরা বেগম, কন্যা ও বোন তার সঙ্গে কেরানীগঞ্জ কারাগারে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় স্ত্রী রাহাত আরা বেগম জানান, দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় মির্জা ফখরুলের ৫ কেজি ওজন কমে গেছে। উচ্চ রক্তচাপ, আইবিএস, মেরুদণ্ড, দাঁতের সমস্যাসহ আরও বেশ কয়েকটি রোগে আক্রান্ত। গ্রেফতারের কিছুদিন আগেও তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করিয়েছেন। কারাগারে বই ও পত্রিকা পড়ে সময় কাটান বিএনপি মহাসচিব।
মহাসমাবেশে সংঘর্ষের ঘটনার দু’দিন পর গ্রেফতার করা হয় মির্জা আব্বাসকে। এরপর তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা হয়। এর মধ্যে গতকাল ৯টি মামলার শুনানি হয়েছে। এরমধ্যে ৬টি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি।
৭২ বছর বয়সী মির্জা আব্বাস বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত। প্রায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেন তিনি।
এদিকে ২ নভেম্বর গ্রেফতারের পর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা দায়ের হয়। এরমধ্যে ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। একমাত্র প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় জামিন পাননি তিনি।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বেলা তিনটার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এই সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। আহত হন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। এছাড়া কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক আহত হন।
এই ঘটনার পর গত ২৮ অক্টোবর মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।