রাজধানীতে এক মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে হঠাৎ কেঁদে ফেললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক স্মরণসভায় ফখরুলকে কাঁদতে দেখা যায়।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা এ দেশকে বাসযোগ্য করে দিয়ে গেছে তাদের আমরা স্মরণ করি। আজকে আমরা একটি নষ্ট সমাজে বসবাস করছি।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছে পুরানো কয়েকটি অস্ত্র পায়, মনে হয় অনেকদিন মাটির নিচে পুঁতে রাখা তাই বের করে আনা হয়েছে। এ রকম মিথ্যা অপবাদ, অপপ্রচার চালাচ্ছে সরকার।’
এ সময় জঙ্গি প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘অনেকে জানেন না ফ্যাসিবাদ কি? নিরীহ মানুষদের ধরে ধরে জঙ্গি বানানো হয়। জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। এটা তো তাদের কোনো অপরাধ নয়। এজন্যই সাধারণ মানুষ যারা ধর্ম পালন করেন তাদের জঙ্গি বানিয়ে ফায়দা হাসিল করা হয়।’
উল্লেখ্য, ১৯৩৯ সালের ১ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া কাজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কাজী জাফর আহমদ। ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
কাজী জাফর আহমদ ভাষা আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়ে ১৯৫৫ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৬২-৬৩ সালে অবিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭২-৭৪ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিপরিষদের শিক্ষামন্ত্রী হন। ১৯৮৬-১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় পার্টির সরকারে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বন্দর-জাহাজ ও নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে উপ-প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৮৯-১৯৯০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬-১৯৯৬ পর্যন্ত পরপর তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজী জাফর আহমদ ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতার ভূমিকা পালন করেন।